কাহালুতে পাঠকের জ্ঞানতৃষ্ণা নিবারণে স্বপ্নের গ্রন্থরাজ্য

মুনসুর রহমান তানসেন 
প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪ ১৮:২৩ ।
বগুড়ার খবর
পঠিত হয়েছে ৫৫ বার।

মানুষের নৈতিক চরিত্র গঠনে ও মনুষ্যত্ব লাভের বড় সহায়ক বই। আর এই বই সংগ্রশালার নাম হলো পাঠাগার, গ্রন্থাগার ও লাইবেরী। পাঠাগারের মাধ্যমেই একটি জাতি উন্নত, শিক্ষিত ও সংস্কৃতিবান হিসেবে গড়ে উঠে। পৃথিবীতে জ্ঞান-বুদ্ধি বিকাশের ক্ষেত্রে প্রাচীনকাল থেকেই বই সংগ্রহশালার প্রচলন ছিল। মানুষের শরীরের জন্য যেমন খাদ্য প্রয়োজন, তেমনি মানুষের মনের খাদ্যও প্রয়োজন। এই মনের প্রয়োজন মেটাতে পাঠাগারের বড় প্রয়োজন।


       পাঠাগার মানুষের ক্লান্ত, বুভুক্ষু মনকে আনন্দ দেয়। মানুষের জ্ঞান প্রসারে রুচিবোধ জাগ্রত করে। পাঠাগারে সংগৃহীত থাকে নানা মত ও পথের বই। বই পড়ে মানুষ নিজেকে গড়ে তুলতে পারে একজন আলোকিত মানুষ হিসেবে। মুদ্রণযন্ত্র আবিস্কারের আগে থেকেই পাঠাগারের প্রচলন ছিল। মানুষ আগে তাঁর জ্ঞান সঞ্চিত করে রাখতো পাথর, পোড়া মাটি, পাহাড় ও চামড়ায় লিখে। সেগুলো সংরক্ষণ করে রাখতো নিজগৃহে, উপাসানালয়ে অথবা রাজকীয় ভবনে। আধুনিক যুগে মুন্দ্রণ যন্ত্রের মাধ্যমে মানুষের সঞ্চিত জ্ঞান লিপিবদ্ধ করে, সেগুলো সংরক্ষণে রাখেন লাইব্রেরী, পাঠাগার ও গ্রন্থাগারে। অনেক জ্ঞানপিপাসু তারা নিজের বাড়িতেই সাজিয়ে রাখেন তাদের পছন্দের অনেক বই। 


     উন্নত জাতি, শিক্ষিত ও সংস্কৃতিবান মানুষ গড়ে তুলতে বগুড়ার কাহালু উপজেলা প্রশাসন কয়েক বছর আগেই একটি পাঠাগার করেছিল। এই পাঠাগারটি ছিল উপজেলা অডিটোরিয়াম হলে। সেই অডিটোরিয়াম হল পরিত্যাক্ত হওয়ার পর সেটি ভেঙ্গে ফেলা হলে পাঠাগারের বইগুলো অনেকটা অরক্ষিত অবস্থায় ছিল। উপজেলা প্রশাসনের সাথে ছোট একটি মসজিদ ছিল। কাহালু উপজেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ হওয়ার পর সেখানেই সবস্তরের মুসল্লী নামাজ পড়েন। এই ছোট মসজিদ দীর্ঘদিন পড়েই ছিল। সেখানে কোন কার্যক্রম না থাকায় পরবর্তীতে লাইবেরী হিসেবে সেখানে অরক্ষিত বইগুলো সংরক্ষণ করা হয়। 


      বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ মেরিনা আফরোজ অত্র উপজেলায় যোগদানের পর উপজেলা পরিষদের ভিতর বেশকিছু নান্দনিক কাজ করেছেন। সেই নান্দনিক কাজের মাধ্যমে ধীরে ধীরে উপজেলা পরিষদ এলাকার সৌন্দর্য অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সকল কার্যক্রম সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করার পাশাপাশি রুচিবোধ জ্ঞানচর্চা ও সৃজনশীল কাজের ক্ষেত্রে খুবই মনোযোগী ইউএনও মোছাঃ মেরিনা আফরোজ। উল্লেখিত বই সংগ্রহশালার ভিতর সংস্কার কাজ করে নির্মাণশৈলী খুবই নান্দনিক করা হয়েছে। পাঠাগারের পশ্চিম-পূর্ব অংশে নান্দনিক কারুকার্যে বুক সেলফ তৈরী করা হয়েছে।


       জানা গেছে এই পাঠাগারে রাখা যাবে হাজারো বই-পুস্তক। যারফলে এই পাঠাগারের নাম দেওয়া হয়েছে গ্রন্থরাজ্য। গ্রন্থেরাজ্যে বসে আরাম-আয়েশে যাতে সাধারণ মানুষ বই পড়তে পারেন সেই ব্যবস্থাও রাখা হবে। আবার যদি কেউ গ্রন্থরাজ্যের বই বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পড়তে চান, সেই ক্ষেত্রে তাকে রেজিস্ট্রার মেইনটেইন করে বই নিতে হবে এবং পড়ার পর সেটি ফেরত দিতে হবে। অল্পকিছুদিনের মধ্যেই এই গ্রন্থরাজ্য জ্ঞান পিপাসুদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। বর্তমানে এই গ্রন্থরাজ্যে ২৯৪ টি বই সংগ্রহে রাখা হয়েছে।


        উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ মেরিনা আফরোজ জানান, সকল শ্রেণিপেশার মানুষ যাতে আমাদের এই গ্রন্থরাজ্যের বই পড়ে রুচিবোধ জ্ঞানচর্চা করতে পারেন সেই ধরনের সকল সুবিধা রাখা হবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে আগামীতে আর অনেক ভালো ভালো বই সংগ্রহ করে এখানে রাখা হবে।