বগুড়ায় চুরি হওয়া স্বর্ণ কুমিল্লায় উদ্ধার, গ্রেফতার ৩

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪ ২০:৩৭ ।
প্রধান খবর
পঠিত হয়েছে ৬৪ বার।

বগুড়া শহরের নিউ মার্কেটে আল-তৌফিক জুয়েলার্সে ১১০ ভরি স্বর্ণ চুরি মামলার মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ। গত ৬ মে চট্রগ্রামের পটিয়া ও ফিরোজশাহ কলোনি এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১৭ ভরি ৮ আনা ৪ রতি স্বর্ণ ও ১টি বোল্ট কাটার উদ্ধার করা হয়।

 

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।

 

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন-কুমিল্লা জেলার কদমতলা এলাকার জুলহাজ ওরফে ঝরুর ছেলে মো. রুবেল ওরফে আঙ্গুল কাটা রুবেল (২৭), নারায়ণগঞ্জ জেলার দেওভোগ গ্রামের শ্রী নন্দ সাহার ছেলে ইব্রাহিম ওরফে নয়ন (৩০) ও কুমিল্লা জেলার দক্ষিণ সদর কমলাপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মো. শাহজালাল (৪৬)।

এর আগে, গত ২০ এপ্রিল রাতে শহরের নিউ মার্কেটে আল তৌফিক জুয়েলার্সে এ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দোকানের মালিক কামরুল হোসেন বাদী হয়ে ২১ এপ্রিল বগুড়া সদর থানায় চুরির মামলা দায়ের করেন।

 

জানা যায়, গত ২০ এপ্রিল সকালে বগুড়া নিউ মার্কেটের আল-তৌফিক জুয়েলার্সে অভিনব কায়দায় দোকানের তালা কেটে ১১০ ভরি স্বর্ণ চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। ঘটনার পরের দিন দোকানের মালিক সদর থানায় চুরির মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে জেলা পুলিশের একটি টিম ছয় দিনব্যাপী গাজীপুর, চাঁদপুর, নরসিংদী, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলায় অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকা থেকে অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়ন সাহাকে গ্রেফতার করা হয়।

 

পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সাথে জড়িত মূল অভিযুক্ত রুবেল ওরফে আঙ্গুল কাটা রুবেলকে একই দিনে ফিরোজশাহ কলোনি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত রুবেলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চুরি করা স্বর্ণ কুমিল্লা সদরের সোয়াগাজী বাজারের বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সের শাহাজালালের কাছে বিক্রি করে। পরবর্তীতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে শাহাজালালকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার কাছ থেকে ১৭ ভরি ৮ আনা ৪ রতি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়নের দেওয়া তথ্যে তালা কাটার যন্ত্র বোল্ট কাটার সদরের ছিলিমপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

 

পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, মূলহোতা রুবেলের নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়নসহ ১২ জন চুরির ঘটনায় অংশ নেয়। এর মধ্যে নয়নের দায়িত্ব ছিল স্বর্ণের দোকানের তালা কাটার। বাকিরা ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা পালন করে। ঘটনার দিন চুরি করা স্বর্ণ নিয়ে যাওয়ার সময় তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে মূলহোতা রুবেলের নির্দেশনায় নাটোর জেলার মাদ্রাসা মোড়ে একত্রিত হয়ে তারা কুমিল্লা চলে যায়। তারপর নিজেদের মধ্যে চুরির মালামাল ভাগ করে নেয়। গ্রেফতার এড়াতে তারা প্রত্যেকে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতো।

 

তিনি আরও জানান, অভিযুক্তরা সকলেই ভাসমান। তারা আন্তঃজেলা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। সাধারণত মোবাইল, বিকাশ এবং স্বর্ণের দোকন চুরি তাদের মূল লক্ষ্য। গ্রেফতার ব্যক্তিরা যে যেকোনো জেলায় চুরি করার পূর্বে আগেই চুরির স্থান পরিদর্শন করে থাকে। বিশেষ করে সরকারি ছুটির দিনে চুরি করে। আসামি রুবেল ওরফে আঙ্গুল কাটা রুবেলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় ১২টি, ইব্রাহিম ওরফে নয়নের বিরুদ্ধে ৬টি ও মো. শাহাজালালের বিরুদ্ধে ২টি চুরির মামলা রয়েছে। অন্যান্য পলাতক আসামিদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান চলমান রয়েছে।

 

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার, আব্দুর রশিদ, মো. শরাফত ইসলাম, সুমন রঞ্জন, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ প্রমুখ।