বগুড়ায় পরিবারের আপত্তির মুখে কবর থেকে উঠানো গেল না যুবদল কর্মীর লাশ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৭ ।
প্রধান খবর
পঠিত হয়েছে ২৪৩ বার।

বগুড়ায় পরিবারের আপত্তির মুখে এক বছর আগে মারা যাওয়া যুবদল কর্মীর লাশ করব থেকে উত্তোলন না করে ফিরে এসেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ।

 

যুবদল কর্মী  ফোরকান আলী শাজাহানপুর উপজেলার ঘাসিড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সকাল ৭ টার দিকে বগুড়া- ঢাকা মহাসড়কে শাজাহানপুর উপজেলার 

 

সাজাপুর নামক স্থানে বিএনপির মিছিলে গিয়ে তিনি হৃদ রোগে আক্রান্ত হন।পরে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। ওই দিন ফোরকানের লাশ পারিবারিক ভাবে দাফন করা হয়।

 

এদিকে গত ৩০ অক্টোবর শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক ইউনুছ আলী হলুদ বাদী হয়ে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান করে আওয়ামীলীগের ১৬০ জন নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সকাল ৭ টার দিকে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সাজাপুর এলাকায় মহাসড়কে উঠামাত্রই প্রধান আসামী শেখ হাসিনার নির্দেশে অন্যান্য আসামীরা মিছিলে হামলা করে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একের পর এক  ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির মুখে বিএনপির নেতাকর্মীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় যুবদল কর্মী ফোরকান রক্তাক্ত জখম হন।পরে তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয় সেই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার কারনে নিহতের পরিবার মামলা করার সাহস পাননি।

 

এদিকে আদালতের নির্দেশে মামলাটি শাজাহানপুর থানায় এজাহার হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করা হয়। ইতিমধ্যে পুলিশ এই মামলায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মামলাটি সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করতে যান। এসময় ফোরকান আলীর পরিবার থেকে আপত্তি জানানো হয়। 

 

ফোরকান আলীর বাবা বলেন, আমার ছেলে বিএনপির মিছিলে গিয়ে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তাকে কেউ হত্যা করেনি। তার শরিরে কোন জখম বা আঘাতের চিহ্ন ছিল না।আমার ছেলের স্বাভাবিক মৃত্যু হওয়ায় আমরা সেই সময় মামলা করিনি। সরকার পরিবর্তনের পর 

 

আমাদের অনুমতি না নিয়ে ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে  ইউনুছ আলী হলুদ আদালতে মামলা করেছেন। তিনি আরো বলেন  আমি এফিডেভিটের মাধ্যমে আমার ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটি আদালতকে জানিয়েছি।তবে এখন শুনানী হয়নি। এছাড়াও মামলার তদন্তকার্যক্রম স্থগিত রাখা এবং আসামীদেরকে হয়রানী না করার জন্য পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত ভাবে আবেদন করেছি।

 

মামলার বাদী যুবদল নেতা ইউনুছ আলী হলুদ বলেন,বাদীর সাথে আলোচনা করেই মামলা করা হয়েছে। মামলায় নিহত ফোরকানের একজন আত্মীয়ের নাম থাকায় এখন ফোরকানের বাবা অস্বীকার করছেন।

 

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ইতিমধ্যে এই মামলায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।আদালতের নির্দেশে ময়না তদন্তের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে

 

লাশ উত্তোলন করতে যাওয়া হয়। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে লাশ উত্তোলনে আপত্তি জানানোর কারনে লাশ উঠানো যায়নি।

 

বগুড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদমান আকিফ বলেন, আদালতের নির্দেশ থাকলেও লাশ উত্তোলনের ক্ষেত্রেআমাদের  নিহতের পরিবারের সহযোগিতা এবং কবর সনাক্ত করতে হয়। ফোরকানের বাবা বলেছেন মামলার বিষয় তিনি আদালতকে জানিয়েছেন,কিন্তু আদালতের কোন নির্দেশনা তার কাছে নেই। ফোরকানের বাবা সময় নিয়েছেন,আদালতে যোগাযোগ করে লাশ না উঠানোর জন্য নির্দেশনা নিয়ে আসবেন। একারনে লাশ উত্তোলন না করে তাকে সময় দেয়া হয়েছে।