শিগগিরই অতিরিক্ত, যুগ্ম ও উপসচিব পদে পদোন্নতি
পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রশাসনের তিন স্তর-অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব ও উপসচিব পদে শিগগিরই পদোন্নতি দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরপর সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) একাধিক বৈঠক করেছে। তবে তালিকা চূড়ান্ত করতে আরও কয়েকটি বৈঠকের প্রয়োজন হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
আরও জানা যায়, প্রথমে সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়টি চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কারণ, এ তালিকা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৩০তম ব্যাচকে মূল বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। এরপর পর্যায়ক্রমে পদোন্নতি হবে উপসচিব (মূল বিবেচনায় ২৪তম ব্যাচ) থেকে যুগ্মসচিব এবং যুগ্মসচিব (মূল বিবেচনায় ২০তম ব্যাচ) থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া প্রতিটি স্তরেই যুক্ত হবেন বিভিন্ন ব্যাচের বঞ্চিতরা। পাশাপাশি বিধান অনুযায়ী পদোন্নতি দেওয়া হবে অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাদেরও।
জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এপিডি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, পদোন্নতি প্রশাসনের নিয়মিত প্রক্রিয়ার অংশ। তিন স্তরে পদোন্নতির জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। যুগ্মসচিব ও উপসচিব পদোন্নতির জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব পদোন্নতির প্রক্রিয়াও শুরু করেছি। এসএসবির বৈঠক চলছে। শিগ্গিরই পদোন্নতির বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যুগ্মসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে ২৮৭, উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পদে ৫৭২ এবং সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব ৫৪২ জন কর্মকর্তার তথ্য যাচাই করা হবে। প্রায় দেড় হাজার কর্মকর্তার চাকরিজীবনের যাবতীয় তথ্য যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করছে পদোন্নতির সুপারিশকারী কর্তৃপক্ষ সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি)। ইতোমধ্যে এসএসবির সভাপতি ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে গত সপ্তাহের সোমবার একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তাদের কর্মজীবনের সব নথি পর্যালোচনা করা হয়। পদোন্নতির প্রয়োজনীয় নম্বর, বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন (এসিআর), চাকরিজীবনের শৃঙ্খলা, বিভাগীয় ও দুর্নীতিসংক্রান্ত অভিযোগ, মামলা, ডিজিএফআই এবং জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদনসহ সামগ্রিক বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রশাসনে বর্তমানে অতিরিক্ত সচিবের ২১২টি পদের বিপরীতে কর্মরত ৪৫৩ জন। যুগ্মসচিবের ৫০২টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে কর্মরত ৮৬২ জন। সুপারনিউমারারি পদসহ উপসচিবের অনুমোদিত পদ এক হাজার ৪২০টি। তবে কর্মরত আছেন ১ হাজার ৫৯৮ জন।
সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দিতে চলতি বছরের শুরুতেই প্রশাসন যোগ্য কর্মকর্তাদের তথ্য-উপাত্ত চেয়ে সব সচিবকে চিঠি পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। উপসচিব পদোন্নতির জন্য নিয়মিত ব্যাচ হিসাবে ৩০তম ব্যাচকে বিবেচনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি লেফট আউটসহ প্রশাসন ক্যাডারের ৩১৯ জন কর্মকর্তা পদোন্নতির যোগ্য হয়েছেন। এছাড়াও আদার্স ক্যাডারের ২২৩ কর্মকর্তা ডিএস পুলে যোগ দিতে আবেদন করেছেন। এসব কর্মকর্তার প্রয়োজনীয় নম্বর, চাকরিজীবনের শৃঙ্খলা-দুর্নীতির বিষয়সহ ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে চাকরিজীবনের যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত এবং পরিবারের সদস্যসহ নিকটাত্মীয়দের সম্পর্কেও খোঁজ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পদোন্নতির জন্য নিয়মিত হিসাবে ২৪তম ব্যাচকে বিবেচনা করা হচ্ছে। ৩৩৬ জন কর্মকর্তা ২০০৪ সালে এই ব্যাচে চাকরিতে যোগদান করেন। এর মধ্যে ৩২৯ জন কর্মকর্তা পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে লেফট আউট হয়ে বঞ্চিত আছেন ৪৩ কর্মকর্তা। অন্যান্য ক্যাডারের যোগ্যতা অর্জন করেছেন ২০০ কর্মকর্তা। সবমিলিয়ে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতির জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছেন ৫৭২ জন কর্মকর্তা। যুগ্মসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতিতে নিয়মিত হিসাবে প্রশাসন ক্যাডারের ২০তম ব্যাচকে বিবেচনায় আনা হচ্ছে। প্রশাসন ক্যাডারের পাশাপাশি অন্যান্য ক্যাডার থেকেও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কর্মকর্তাকে এ পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। এবারের অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির জন্য ২৮৭ জন কর্মকর্তাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।