বগুড়ায় মাছ-মিষ্টিতে জমজমাট পোড়াদহ মেলা
স্টাফ রিপোর্টার
বগুড়া গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের পোড়াদহ নামকস্থানে চারশ বছর আগে থেকে সন্ন্যাসী পূজা উপলক্ষে ইছামতী নদীর তীর ঘেঁষে ব্যক্তি মালিকানা জমিতে একদিনের জন্য এই পোড়াদহ মেলা বসে। একদিনের মেলা হলেও এর রেশ থাকে বেশ কয়েকদিন। বাংলার বছরের মাঘ মাসের শেষ অথবা ফাল্গুন মাসের প্রথম বুধবার এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
১২ ফেব্রুয়ারি বুধবার বগুড়ার গাবতলীর ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলা উপলক্ষে আশপাশের গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন ভীড় জমায়। ধুমধাম করে খাওয়াতেই হবে-যা অনেকটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।
এই পোড়াদহ মেলাকে ঘিরে উপজেলার দুর্গাহাটা হাইস্কুল মাঠ, দাড়াইল বাজার, সাবগ্রাম, অদ্দিরগোলা, পাচমাইল বাজার সহ বিভিন্নস্থানে মেলা বসানো হয়। মেলার আকর্ষণ বড় বাঘাইড়, বোয়াল, কাতলা, রুই, ব্লাক কার্প, গ্লাস কার্প, মৃগেল, সিলভারকার্প, বিগ্রেড, কার্প, চিতল সহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের মাছ। মেলায় ৩৫ কেজি ওজনের বাঘাইড় বিক্রি হয়েছে ১৭০০ টাকা কেজি, ২৭ কেজি ওজনের কাতলা বিক্রি হয়েছে ১৪০০ টাকা কেজি, ২০ কেজি ওজনের ব্লাক কার্প বিক্রি হয়েছে ১০০০ টাকা কেজি এবং মাছ আকৃতির ১৫ কেজি ওজনের মিষ্টি ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে
রকমারি জাতের মাছ এ মেলার প্রধান আকর্ষণ। বুধবার ভোরের আগেই আড়তে আনা হয় বড় আকারের মাছগুলো। আর ভোর থেকেই আড়তে আড়তে ছুটে যান খুচরা ব্যবসায়ীরা। চাহিদা অনুযায়ী তারা মাছ কেনেন। পরে মাছের পসরা সাজিয়ে দোকানে দোকানে জেঁকে বসেন এসব ব্যবসায়ীরা। দিনভর দোকানগুলোয় চলে ধুমছে কেনাকাটা।
রুই, কাতলা, মৃগেল, বোয়াল, সিলভার কার্প, বিগহেড, কালবাউস, পাঙ্গাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায় এ মেলায়। মেলায় বড় মাছ রুই ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি, কাতলা ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি, সিলভার কার্প ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি, কার্প মাছ ৩৫০ টাকা কেজি, চিতল ১২০০ টাকা কেজি, বোয়াল ১২০০ টাকা কেজি , আইর ১৬০০ টাকা কেজি, গ্লাস কার্প ১২০০ টাকা কেজি, যমুনার পাঙ্গাস ১২০০ টাকা কেজি এবং ২ থেকে ৪ কেজি ওজনের ছোট মাছ ৩০০-৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।
বাহারি মিষ্টান্ন সামগ্রী এ মেলার আরেক আকর্ষণ। মাছ আকৃতির মিষ্টি, রসগোল্লা, সন্দেশ, জিলাপি, নিমকি, তিলের নাড়ু, খই, শুকনা মিষ্টি পাওয়া যায়। দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের মিষ্টি পোড়াদহ মেলার অন্যতম আকর্ষণ। ১২ কেজি ওজনের মাছ আকৃতির মিষ্টি ছিল এবার প্রধান আকর্ষণ।
এছাড়াও মেলার বাহারি ডিজাইনের কসমেটিকস, খেলনা, গিফট সামগ্রী, চুড়ি, কানের দুল, মালা, কাজলসহ নানা ধরনের প্রসাধনী ও খেলনা সামগ্রী পাওয়া যায়। এছাড়া এ মেলায় পাওয়া যায় কাঠের, স্টিল ও লোহার বিভিন্ন আসবাবপত্র।