সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই: আব্দুস সালাম
নওগাঁ প্রতিনিধি
বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বলেছেন, বিচারের নামে, সংস্কারের নামে বছরের পর বছর পার করে দেওয়া যাবেনা। ওই যে হাসিনা মাঝেমধ্যে বলে টুপ করে আইসা পড়বে। সে নাকি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এই কারনেই বলি ড. ইউনুস আপনাকে এই ষড়যন্ত্রকে থামাতে হবে। নির্বাচিত সরকার এবং নির্বাচন ছাড়া এর কোন বিকল্প নাই। সেই কারনেই আমরা নির্বাচন চাই।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে নওগাঁর বদলগাছি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে রাজশাহী বিভাগের জেলা, মহানগর বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আব্দুস সালাম বলেন, দেশপ্রেম আনতে হবে, দেশপ্রেম ছাড়া রাজনীতি হয়না, ব্যক্তিপ্রেম দিয়ে হয়না। যে নেতা হবে সবাইকে ভালোবাসবে। নিজেকে ভালোবাসলে নেতা হওয়া যায়না। এটাই শিখতে হবে রাজনীতিতে। সভাপতি সাধারণ সম্পাদক হয়ে থাকবেন বছরের পর বছর চলে যাবে সংগঠনের কোন লাভ হবেনা ওইটা কিন্তু এখন হবেনা। হাসিনা জবাবদিহিতার উর্দ্ধে ছিলো বলেই কিন্তু স্বৈরাচার হয়েছে। এই সরকারও ওই দিকে দেশকে ঠেলে দিতে চেয়েছিলো। আমরা বলেছি ওইসব অকাম কুকামের দিকে যাইয়েন না। আপনরা নির্বাচনটা করান, নির্বাচনটা করায়ে যান। আরেকটা হলো বিচার, বিচার তো সবচেয়ে বেশি আমরা চাই। আমাদের নেতাকর্মীরা সবচেয়ে বেশি হত্যার স্বীকার হয়েছে, গুম হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে। বছরের পর বছরের জেলে কাটিয়ে দিয়েছে। আমরাই তো বিচার চাই, আমরাই তো সংস্কার চাই, আমরাই তো নির্বাচন চাই। বলে অদের ৩ দফা, আরে এই ৩ দফা তো আমাদেরই ৩ দফা।
তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচন চাই। ওই তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানাইতে হবে এই জন্য শুধু নির্বাচন চাইনা। সেটা তো অবশ্যই চাই। দেশ চালাইতে হলে খালেদা জিয়া তারেক রহমানের মতোই তো নেতা লাগবে। এটা তো পরিষ্কার বিএনপি ক্ষমতায় গেলেই আধিপত্যবাদকে রুখতে পারবে। আজকে যে অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সেটিকে সংষ্কার করতে পারবে। এই জন্যই তো বিএনপি ক্ষমতায় যেতে চায়। আমরা দলকরি রাজনীতি করি, হ্যাঁ ক্ষমতায় তো যাবোই, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যই তো করি। ক্ষমতায় না গেলে পরিবর্তন হবে কীভাবে। যদি ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতার দায়িত্ব না নিতো তাহলে বাংলাদেশ ওই সময় ধ্বংস হয়ে যেতো। যদি বেগম খালেদা জিয়া ৯০ এর পরে ক্ষমতায় না আসতো তাহলে তো মহিলারা এতো সুযোগ সুবিধা ই পেতোনা। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় বলি, অনেক কিছু বলি। আজকে যতকিছু করছে বেগম খালেদা জিয়া এসব তো কোনকিছুই হতোনা। সেই কারনে এই দেশটাকে, দেশের সার্বভৌমত্বটাকে যে বিক্রি করে দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ সেটা থেকে দেশকে বাঁচতে হলেও বিএনপিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে হবে। নিজেদের ভোগবিলাসের জন্য নয়।
আব্দুস সালাম আরও বলেন, মানুষ মনে করে বিএনপি হলো সৎ। বিএনপি কখনো অন্যায় করবেনা। বিএনপি সততার দিক দিয়ে এক নম্বর। কাজেই সেই সততা দিয়ে আমাদেরকে মানুষের মন জয় করতে হবে। এখন অন্যরা চুরি করতেছে। আমাদের দুই একটা ছিটেফোঁটা থাকতে পারে। কিন্তু সেটার জন্য তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। যদি এখনো কেউ থেকে থাকে তাহলে তাদেরকে বলবেন সাইটলাইনে চলে যাওয়ার জন্য। তারা যেনো লিডারশিপের ধারে কাছে না আসে। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা অনেকেই জানেন তারেক রহমানের টেলিফোনে কিন্তু অনেকের কাছে বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকের টেলিফোন তারেক রহমান ধরেন না। কাদের ধরেনা বুঝে নিয়েন। কাজেই বুঝতে হবে এটাই হলো তারেক রহমান যে আগামীতে রাষ্ট্রের দায়িত্বে আসবে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, শহীদ জিয়ার সন্তান হিসেবে, বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান হিসেবে রাষ্ট্রকে উন্নয়নে আনতে ১ বছরও উনার সময় লাগবে না।
সভায় রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতিস ফখরুল ইসলাম রবিন, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এএইচএম ওবায়দুর রহমান চন্দন, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলে হুদা বাবুল, নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু, সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশসহ রাজশাহী বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের সিনিয়র নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।