বগুড়ায় বিএনপি নেতা এখলাছ বাহিনীর বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫ ১৬:৫৯ ।
বগুড়ার খবর
পঠিত হয়েছে ৫০ বার।

বগুড়ায় বিএনপি নেতা এখলাছ হোসেন মন্ডলের নেতৃত্বে গঠিত সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে একই ইউনিয়নের আব্দুল মান্নান এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার বগুড়া প্রেসক্লাবে শাখারিয়া ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বাবলার মেয়ে মার্জিয়া আক্তার যে বক্তব্য প্রদান করেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি এখলাছ হোসেন মন্ডল দলের প্রভাব খাটিয়ে সেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত নেতা আতিকুর রহমান সাগর এবং ছাত্রদলের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান স্বপনের সঙ্গে মিলে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলে।

এই বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে চালিতাবাড়ী, পাঁচবাড়িয়া, উলিপুর, নাকান্দি, কদিমপাড়া ও পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের নিরীহ মানুষের উপর সন্ত্রাসী কায়দায় নির্যাতন, চাঁদাবাজি, মারপিট, ছুরিকাঘাত এবং মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় প্রায় ১০ জনকে ছুরিকাঘাত করে আহত করার অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া, এলাকার মানুষদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানিও করা হয়। এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী একজোট হয়ে মানববন্ধন, জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে।

এ ব্যাপারে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৩ জুন এখলাছ বাহিনী দলবদ্ধ হয়ে এলাকার নিরীহ মানুষদের ওপর হামলা চালিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ এবং আগ্রেয়াস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এই সংঘর্ষে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ৮ জন আহত হন, যার মধ্যে মারুফা আক্তার, বুলবুলি বেগম ও নদী আক্তারের অবস্থা গুরুতর। আহতরা বর্তমানে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পুলিশ ও সেনাবাহিনী গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এখলাছ বাহিনীর তিন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে এবং বিপুল পরিমাণ দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এর পরদিন আবারও যৌথ অভিযান চালিয়ে আরও দুই সদস্যকে গ্রেফতার এবং অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

অভিযোগকারীরা জানায়, সন্ত্রাসীদের রক্ষা করতে এখলাছ বাহিনীর সদস্য সাগরের স্ত্রী মার্জিয়া আক্তার সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।

স্থানীয়রা বলেন, “ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসাসহ যে কোনো অপকর্ম এই সন্ত্রাসীরা ছাড়াই করছে।” সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারের পর এলাকার পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে।

এ ঘটনায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে এই ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের মোতায়েন থাকায় গতকাল এখানে এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের পরীক্ষা দিতে পেরেছেন এবং ঘরে ফিরতে সক্ষম হয়েছেন।