শিক্ষকদের কর্মবিরতি
বগুড়ায় পাঁচ সরকারি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা স্থগিত
স্টাফ রিপোর্টার
চার দফা দাবিতে সারা দেশের মতো বগুড়াতেও সরকারি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন। এর ফলে জেলার ১৩টি সরকারি স্কুলের মধ্যে পাঁচটিতে শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও নির্ধারিত পরীক্ষা কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বর্জন করেছেন। অন্যদিকে আটটি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষাসহ নিয়মিত কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি এ নিয়ে একই দিন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, রাজশাহী অঞ্চল কার্যালয়ের উপপরিচালককে লিখিতভাবে জানান।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় মোট ১৩টি সরকারি স্কুল রয়েছে। নিয়োগবিধির অভাব, পদোন্নতি বঞ্চনা, প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তার বহু পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকা—এসব কারণে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরকে আলাদা করার ঘোষণা তিন মাস আগে দেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। এসব অসন্তোষ থেকেই শিক্ষকরা পরীক্ষাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বর্জন করছেন বলে জানানো হয়।
পরীক্ষা বর্জনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বগুড়া জিলা স্কুল, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গাবতলী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সারিয়াকান্দি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং সান্তাহার হার্ভে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এসব প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে, শাজাহানপুরের সরকারি চাঁচাইতারা মাদলা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়, শেরপুর সরকারি ডায়মন্ড জুবলী মডেল হাইস্কুল, কাহালু সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, ধুনট সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, দুপচাঁচিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি সোনাতলা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, নন্দীগ্রাম সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং শিবগঞ্জ সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম নিয়মিত চলছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ বলেন, ১৩টি সরকারি স্কুলের মধ্যে শহরের দুটিসহ পাঁচটিতে শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও পরীক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেননি। বাকি আটটি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম চলছে। পরিস্থিতি জানিয়ে রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে চলছে এ কর্মসূচি। শিক্ষকদের চারটি দাবি হলো—সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের গেজেট প্রকাশ; বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার শূন্য পদে দ্রুত নিয়োগ ও পদায়ন; সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি; এবং ২০১৫ সালের মতো সহকারী শিক্ষকদের দুই থেকে তিনটি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বেতন সুবিধা বহাল করা।