রাগের কারণ কী?

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৯:২৪ ।
লাইফস্টাইল
পঠিত হয়েছে বার।

ক্রোধ বা রাগ একটি স্বাভাবিক তীব্র মানসিক অবস্থা, যা অনুভূতিতে আঘাত প্রাপ্তির ফলে একটি শক্তিশালী অস্বস্তিকর এবং অসহযোগী প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকে। ক্রোধের সম্মুখীন একজন ব্যক্তি মানসিক অবস্থার পাশাপাশি প্রায়ই শারীরিক প্রভাব অনুভব করেন। যেমন: হৃদ্‌স্পন্দন বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ এবং অ্যাড্রেনালিন ও নোরাড্রেনালিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

যেকোনো মানুষের শরীরেই রাগ থাকে, তবে অতিরিক্ত রাগ হলে সেটা অস্বাভাবিক। এর পেছনে লুকিয়ে থাকে কোনো না কোনো মানসিক রোগ। অতিরিক্ত রাগ শরীরে নেতিবাচক প্রভাবও ফেলে। পারিবারিক, সামাজিক জীবন ও পেশাগত জীবনকে ব্যাহত করে। অস্বাভাবিক রাগের কারণ ও প্রতিকার নিয়ে চিকিৎসকরা জানান–

রাগের কারণ: জেনেটিক বা বংশগত।

পরিবেশগত : অত্যধিক এবং দীর্ঘমেয়াদি চাপ।
দীর্ঘমেয়াদি উৎপীড়ন/উত্ত্যক্তকরণ।
অতিরিক্ত ক্লান্তি, ক্ষুধা, ঘুমের অভাব।
বঞ্চিত থাকা, অর্থনৈতিক, সামাজিক, পেশাগত জীবনে দীর্ঘমেয়াদি বঞ্চিত করা, স্নেহ, মমতা, ভালোবাসার অভাব।
নেশাদ্রব্য সেবন: অতিরিক্ত রাগের অন্যতম প্রধান কারণ।

সম্পর্কগত সমস্যা: Conflict, স্বামী-স্ত্রী, মা-বাবা, ভাই-বোন, সন্তানের সঙ্গে দ্বন্দ্বমূলক সম্পর্ক।
অতিরিক্ত টিভি দেখা, পর্নোগ্রাফি আসক্তি, ইন্টারনেট বা ফেসবুকে আসক্তি।
ইমপালস কন্ট্রোল ডিসঅর্ডার: যারা কোনো কারণ ছাড়াই রাগে ফেটে পড়েন, রাগে ফোস ফোস করতে থাকেন, অস্বাভাবিক আচরণ করেন, পরে ভুল বোঝেন। আমাদের সমাজে অনেক লোক আছে যারা এ রোগে ভুগছে।

নিউরোট্রান্সমিটারের ইমব্যালেন্স, যেমন: সেরোটিনের অভাব মস্তিষ্কে হলে রাগ বেড়ে যায়।
অন্যান্য : অস্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব, বিষণ্নতা, অতিরিক্ত টেনশন, শুচিবাই, বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডার, সিজোফ্রোনিয়া।
দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক অসুস্থতা: ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হাঁপানি, হৃৎপিণ্ডের সমস্যা, হাড় ভাঙা, ঈর্ষা, পারকিনসনিজম, স্ট্রোক, মৃগিরোগ, ব্রেইন টিউমার, লিভার, কিডনি ও হার্টফেইলিউরের রোগী।
চিকিৎসা : ফিজিক্যাল ওষুধ, সাইকোলজিক্যাল ও সোশ্যাল।

ওষুধ : TCA, SSRI, SNRI (বিষণ্নতানাশক ওষুধ)। Antipsychotic, বেনজোডায়েজিপিন (তিন সপ্তাহের বেশি নয়)।
সাইকোলজিক্যাল : CBT, Family Therapy, (ফ্যামিলি থেরাপি)। এনগার ম্যানেজমেন্ট রিলাক্সজেশন থেরাপি। দীর্ঘমেয়াদি কাউন্সেলিংই অতিরিক্ত রাগ নিয়ন্ত্রণে আনার সর্বোত্তম পন্থা, রাগের চিকিৎসা করলে হবে না, রাগের পেছনে লুকিয়ে থাকা মানসিক রোগ শনাক্ত করে ট্রিটমেন্ট করতে হবে।
অতিরিক্ত রাগের শারীরিক প্রভাব: হৃৎপিণ্ডের গতি বৃদ্ধি, বুকে চাপ অনুভব, শ্বাসকষ্ট, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, দীর্ঘ মেয়াদে হাইপারটেনশন, মাথাব্যথা, চুল পড়ে যাওয়া, মাংসপেশি শক্ত হয়ে যাওয়া, মস্তিষ্কের হাইপোথেলামাস থেকে কর্টিসল হরমোন নিঃসরণ, cortisol হরমোন রক্তে বেশি থাকলে দীর্ঘমেয়াদি হার্টে সমস্যা হতে পারে। দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গিয়ে জীবাণুজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।