নাটোরের কাঁচাগোল্লা জিআই পণ্য হচ্ছে

নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৩ ২০:৪৪ ।
প্রতিবেশী জেলা
পঠিত হয়েছে ১৩ বার।

নাটোরের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি কাঁচাগোল্লা ভৌগোলিক নির্দেশক চিহ্ন (জিআই) পণ্য হতে যাচ্ছে। বুধবার (২৯ মার্চ) জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির হাতে জিআই পণ্য হিসেবে কাঁচাগোল্লা তালিকাভুক্তির জন্য এফিডেভিটের কপি হস্তান্তর করেন। 

জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ’যেহেতু কাঁচাগোল্লার সঙ্গে নাটোরের আবেগ জড়িত, এ কারণে আমার বিদায়ের আগে কাজটি শুর করেছি। আশা করছি অল্প দিনের মধ্যে জিআই পণ্য হিসেবে কাঁচাগোল্লা অন্তর্ভুক্ত হবে।‘

আদি কাঁচাগোল্লার প্রকৃতি পরিবর্তন করে বিভিন্ন স্থানে কাঁচাগোল্লা বিক্রি করা হচ্ছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ’এই (জিআই) তালিকাভুক্তির মধ্য দিয়ে নাটোরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ হবে।’ 

 

লোকশ্রুতি অনুযায়ী, নাটোরের রানি ভবানী মিষ্টি অনেক পছন্দ করতেন। তার রাজপ্রাসাদে নিয়মিত মিষ্টি সরবরাহ করতেন লালবাজারের মিষ্টি বিক্রেতা মধুসূদন পাল। একদিন মধুসূদন পালের ২০ জন কর্মচারীর সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। দোকানে দুই মণ ছানা রাখা ছিল। ছানাগুলো নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে মধুসূদন ছানার ওপর চিনির সিরা দিয়ে ভিজিয়ে দেন। এরপর এগুলো চেখে দেখেন এর স্বাদ হয়েছে অপূর্ব। এদিকে রানি ভবানীর লোকেরা মিষ্টি নিতে এলে মধুসূদন সিরা দেওয়া ছানাগুলো পাঠিয়ে দেন। রানি ভবানী এই মিষ্টি খেয়ে অনেক প্রশংসা করেন এবং এর নাম জানতে চান। মধুসূদন পাল তখন কাঁচা ছানা থেকে তৈরি বলে এর নাম দেন কাঁচাগোল্লা। এটিই ছিল কাঁচাগোল্লার ইতিহাস। 

এই গল্প নাটোরের সবার মুখে মুখে ফিরে। নাম গোল্লা হলেও এটি দেখতে গোল নয়। ছানা, চিনি ও এলাচ দিয়ে এই কাঁচাগোল্লা তৈরি করা হয়। এই কাঁচাগোল্লার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নাটোরবাসীর আবেগ। ২৫০ বছর আগে কাঁচাগোল্লা আবিষ্কৃত হয়ে আজও তার সুনাম বজায় রেখেছে। নাটোরে বিয়ে, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা অতিথি আপ্যায়নে কাঁচাগোল্লা থাকবেই।