বগুড়ায় মন্দিরে পূজা-অর্চনা চলাকালে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

শেরপুর(বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:২২ ।
প্রধান খবর
পঠিত হয়েছে ৩৮ বার।

বগুড়ার শেরপুরে শতাব্দী প্রাচীন একটি মন্দিরে পূজা-অর্চনা চলাকালে হামলা-ভাঙচুর ও দানবাক্স-পূজার সরঞ্জামাদি লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বেলতা গ্রামে। উক্ত ঘটনায় মন্দির কমিটির সভাপতি পূজারী সঞ্চয় সরকার মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যারাতে মন্দিরটিতে বসে পূজা-অর্চনা করছিলেন তারা। এসময় একই গ্রামের নির্মল চন্দ্র সরকার ও তার ভাই পরিমল চন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে দশ থেকে বারোজন ব্যক্তি এসে মন্দিরে হামলা চালায়। এমনকি তারা মন্দিরের ভোগঘর, মহাদেবের আসন ভাঙচুর করেন। এছাড়া পূজা-অর্চনার জন্য লাগানো ফুলের বাগানের গাছগুলো উপড়ে ফেলে দেয়। পাশাপাশি মন্দিরে রক্ষিত দান বাক্স, সামনের আটচালা ছয় বান্ডিল টিন, টিউবওয়েলের মাথা ও পূজার থালা-বাসন লুটপাট করে নিয়ে যায় তারা। এতে অর্ধলাখ টাকার মতো ক্ষতি সাধিত হয়েছে। পরবর্তীতে দৈনন্দিন পূজা-অর্চনা করতে যাওয়া পূজারিদেরও বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্ত পরিমল চন্দ্র সরকার মন্দিরের জায়গা পৈতৃক দাবি করে বলেন, তাদেরকে না জানিয়ে সেখানে মন্দিরের কাজ শুরু করায় বাধা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মন্দিরটি ঠিক রেখে বাকি সব উচ্ছেদ করা হয়েছে। মন্দিরে পূজা অর্চনা করতে হলে তারা নিজেরাই করবেন। অন্য কাউকে করতে দিবেন না বলে দাবি করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শতাব্দী প্রাচীন ওই মন্দিরে নিয়মিতভাবে পূজা-অর্চনা হয়ে আসছে। সিএস খতিয়ান অনুযায়ী বেলতা গ্রামে অবস্থিত জলাশয়ের ২ দশমিক ২২ একর জমি রানী ভবানী এস্টেটের সম্পত্তি। আর এই জলাশয়ের পশ্চিমে দশ শতাংশ জমির উপরে ওই মন্দিরটির অবস্থান। তৎকালীন সিএস খতিয়ানেও এই সম্পত্তি জনসাধারণের ব্যবহার্য্য হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। এরপরও ওই গ্রামের বাসিন্দা নির্মল চন্দ্র সরকার ও তার জ্যাঠাতো ভাই পরিমল চন্দ্র সরকার উল্লেখিত জমিগুলো নিজেদের পৈতৃক দাবি করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে মন্দিরটি উচ্ছেদের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

এদিকে মন্দিরে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনাটিকে দুঃখজনক অখ্যায়িত করে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নিমাই ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক সংগ্রাম কুÐু বলেন, খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সুষ্ঠু-সমাধানের চেষ্টা করা হবে বলে দাবি করেন তারা।

জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা এ প্রসঙ্গে বলেন, ঘটনার পর মন্দির কমিটি ও পূজারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।