পাবনায় রাতের আড্ডায় রাষ্ট্রপতি খেলেন চিড়া ভাজা সিঙ্গারা চপ ও লুচি

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৪ ১৩:২২ ।
দেশের খবর
পঠিত হয়েছে বার।

আড্ডাপ্রিয় এবং বন্ধুবৎসল রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন নিজ জন্মস্থান পাবনায় সোমবার রাতে পুরোনো স্মৃতি খুঁজে ফিরলেন। সোমবার রাতে তিনি পুরোনো এবং প্রিয় প্রতিষ্ঠান পাবনা প্রেস ক্লাবে বাল্যবন্ধু, সতীর্থ সাংবাদিক সহকর্মীদের সঙ্গে সময় কাটান। 

 

দেশের ২২তম  রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর রোববার চতুর্থবারের নিজ জেলায় সরকারি সফরে আসেন রাষ্ট্রপতি। সফরের দ্বিতীয় দিন সোমবার দুপুরে তিনি সার্কিট হাউসে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং রাতে আসেন পাবনা প্রেস ক্লাবে। 

 

মো.সাহাবুদ্দিন পাবনা প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য। তিনি স্বাধীনতা পরবর্তীকালে দৈনিক বাংলার বানীর সাংবাদিক হওয়ার সুবাদে পাবনা প্রেস ক্লাবের সদস্য হন। তিনি এ ক্লাবের ২২তম সদস্য এবং পরবর্তীতে তাকে সম্মানসূচক আজীবন সদস্য করা হয়। ক্লাবের কল্যাণ তহবিলসহ সার্বিক উন্নয়নে রাষ্ট্রপতির আসামান্য অবদান রয়েছে। দেশের অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী পাবনা প্রেস ক্লাবও একসময় সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রাজনীতিকসহ সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের আড্ডাস্থল ছিল।

 

যৌবন থেকে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত জীবনের বড় একটি সময় তিনি কাটিয়েছেন পাবনা প্রেস ক্লাবে। তাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর নিজ জেলায় সফরে এলে তিনি প্রেস ক্লাবে আসতে ভুল করেন না। এবারও ৪ দিনের সফরে এসে রাষ্ট্রপতি সোমবার রাতে পাবনা প্রেস ক্লাবে পুরোনো সহকর্মী, বাল্য বন্ধুসহ সতীর্থ সহকর্মীদের সঙ্গে মিলিত হন। এক ঘণ্টারও বেশি সময় রাষ্ট্রপতি প্রেস ক্লাবে অবস্থান করেন। 

 

প্রেস ক্লাবে এসে রাষ্ট্রপতি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। তিনি আনুষ্ঠাকিতায় শরিক না হয়ে আগের মত সবার সঙ্গে বসে আড্ডায় মেতে ওঠেন। এসময় তিনি পুরোনো স্মৃতি তুলে ধরে সবার সঙ্গে নাম ধরে ধরে ডেকে কুশল বিনিময় করেন। আড্ডার এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপতি বাল্যবন্ধুদের সঙ্গে শৈশব, কৈশোর, শিক্ষাজীবন, মুক্তিযুদ্ধ ও বন্দি জীবন, জেলখানায় নির্যাতনসহ অতীতের নানা ঘটনা নিয়ে হাসি ঠাট্টায় মেতে উঠেন। 

 

প্রেস ক্লাবে রাষ্ট্রপতিকে তার প্রিয় মুখোরোচক খাবার এবং চিড়া ভাজা, চপ-সিঙ্গারা, লুচি, আলুর দম দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। 

 

এসময় রাষ্ট্রপতি বলেন, পাবনা প্রেসক্লাব ও পাবনার সাংবাদিকতার সঙ্গে আমার আজীবন ও অন্তরের সম্পর্ক। আমি প্রাণ দিয়ে যে সব প্রতিষ্ঠানকে লালন করি তার মধ্যে পাবনা প্রেসক্লাব অন্যতম। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। 

 

তিনি আরও বলেন, আমি পাবনা জেলার উন্নয়নে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই। আমি আমার সাধ্যমত জেলার উন্নয়নে কাজ করবো। 

 

এ সময় পাবনা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদ, রাষ্ট্রপতির বাল্যবন্ধু পাবনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শিবজিত নাগ, সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম রবি,পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী, এনডিসি, পিএসসি, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো.জয়নাল আবেদীন, প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, বর্তমান সহসভাপতি মির্জা আজাদ, শহিদুর রহমান শহিদ, সাবেক সম্পাদক আব্দুল মতীন খান, সাবেক সম্পাদক উৎপল মির্জা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

 

এদিকে রাষ্ট্রপতি পাবনা প্রেস ক্লাবে অবস্থানকালে হাজার হাজার মানুষ শহরের প্রধান সড়ক আব্দুল হামিদ সড়কের দু’পাশে সমবেত হন। সরকারি কর্মসূচি না থাকায় সাধারণ মানুষ রাষ্ট্রপতির কাছে যেতে পারেন নি। এজন্য তারা রাতে এবং নিরাপত্তা বেষ্টনীর বাইরে এসে জড়ো হন তাদের গর্বিত প্রিয় সন্তানকে অভিবাদন জানাতে। 

 

রাষ্ট্রপতি রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রেস ক্লাব থেকে বের হলে জনতা ‘রাষ্ট্রপতির দু’নয়ন, পাবনাবাসীর উন্নয়ন’, শুভেচ্ছা স্বাগতম রাষ্ট্রপতির আগমন স্লোগানে মুখর করে তোলে। 

 

রাষ্ট্রপতিও তাদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান এবং দোওয়া করতে বলেন। মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা রয়েছে এবং বুধবার রাষ্ট্রপতির ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।