ঢাকায় এসএসসিতে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের নিয়ে চ্যালেঞ্জড শিক্ষার্থী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৪ ১৯:৪৫ ।
দেশের খবর
পঠিত হয়েছে বার।

মঙ্গলবার গণসাক্ষরতা অভিযান এর আয়োজনে রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অডিটোরিয়ামে ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের নিয়ে দিনব্যাপী ‘চ্যালেঞ্জড শিক্ষার্থী সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সকালের অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন এডুকেশন ওয়াচ এর চেয়ারপার্সন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ। উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, সাবেক সচিব এন আই খান, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ড. জাফর ইকবাল, বিশিষ্ট সংস্কৃতিজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (বাস্তবায়ন, মনিটরিং ও যুবসংগঠন)। এছাড়াও বক্তব্য শেষে বাঁশি বাজিয়ে এবং সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শিক্ষাথীদের অনুপ্রাণিত করেছেন সংগীত শিল্পী রাহুল আনন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নিবার্হী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী ও সহ-সঞ্চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষাবীটে কাজ করা চ্যানেল আই এর বিশেষ প্রতিনিধি মোস্তফা মল্লিক।

 

মধ্যাহ্ণভোজের পর দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, এম এ মান্নান এমপি, আরমা দত্ত এমপি। বক্তব্য শেষে শিক্ষার্থীদের এভারেস্ট বিজয়ের সাফল্য ও ব্যর্থতার গল্প শোনান এভারেস্ট বিজয়ী এম এ মুহিত এবং অনুপ্রেরণাদায়ক সংগীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী নকীব খান ও  ফাহমিদা নবী। দ্বিতীয় অধিবেশনে সহ-সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন বিশিষ্ট উপস্থাপিকা শাকিলা মতিন মৃদুলা। সম্মেলনে সারাদেশ থেকে ৪২ টি জেলা থেকে ৫ শতাধিক শিক্ষাথী, অভিভাবক, শিক্ষক ও এনজিও কর্মী অংশগ্রহণ করেন।

 

উক্ত সম্মেলনে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নতুনহাট শফিউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষাথী শিপ্রা রানী সম্মেলনের প্রস্তাবিত ১৫টি সুপারিশ উপস্থাপন করে। 

  

সভায় বক্তরা বলেন, সম্প্রতি প্রকাশিত ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। ১০ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে (কারিগরি বাদে) তিন লক্ষাধিক শিক্ষার্থী এসএসসিতে অকৃতকার্য হয়েছে, ৫১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষার্থীও উত্তীর্ণ হতে পারেনি। দুঃখজনকভাবে ফল প্রকাশের পর ৮ জন আতœহননের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই নি¤œবিত্ত অথবা সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের সন্তান। এদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যাও কম নয়।  পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার কারণে অনেক শিক্ষার্থীকেই পরিবার ও সমাজের কাছে হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়। তারা প্রায়শ হীনমন্যতায় ভোগে ও মানসিক যন্ত্রণার শিকার হয়ে থাকে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আত্মহননের পথও বেছে নেয়। নিঃসন্দেহে এ পরিস্থিতি দুর্ভাগ্যজনক এবং কোনো সচেতন নাগরিকের পক্ষে মেনে নেওয়া কষ্টকর।

 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার এসএসসি ফল প্রকাশের সময় বলেছেন,“যারা ফেল করেছে, তাদের বকাঝকা করা যাবে না। জীবনে এমন সময় একবার আসতেই পারে। তাদের সমস্যা খুঁজে বের করে পড়াশোনায় মনোযোগী করতে হবে। পড়ার পবিবেশ তৈরি করে দিতে হবে।” 

 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতি সম্মান জানিয়েই আমাদের এই আয়োজন। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার কারণে অনেক শিক্ষার্থীকেই পরিবার ও সমাজের কাছে হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়। তারা প্রায়শ হীন্মন্যতায় ভোগে ও মানসিক যন্ত্রণার শিকার হয়ে থাকে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আত্মহননের পথও বেছে নেয়। এ পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক এবং কোনো সচেতন নাগরিকের পক্ষে মেনে নেওয়া কষ্টকর।

 

নির্দ্বিধায় বলা যায়, পরীক্ষার ফলাফল শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বা প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে না।এজন্য পরিবার, সমাজ, বিদ্যালয়, বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থা, ব্যবস্থাপনাও দায়ী। শিক্ষা পরিবারের কর্মী হিসেবে আমরাও এ দায় এড়াতে পারি না। তবে সম্প্রতি অকৃতকার্য শিক্ষাথীদের এইচএসসিতে ভর্তির সুযোগ রাখার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানানো হয়।