নওগাঁয় নাজিম মাতবরের হত্যার রহস্য উদঘাটন

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৪ ২২:৪৩ ।
প্রতিবেশী জেলা
পঠিত হয়েছে বার।

নওগাঁয় আলোচিত নাজিম উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন  করা হয়েছে। মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধান পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যার সাথে জড়িত সুজ্জাত হেসেন (২৭) ও মেহেদী হাসান (২৬) নামে দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এলাকার এক নাপিতকে মারপিট করার অভিযোগে গ্রাম্য সালিশে সুজ্জাতকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও প্রকাশ্যে মারপিট করার কারণে হাতুরি ছুরি দিয়ে নির্মমভাবে নাজিমুদ্দিন মাতব্বরকে হত্যা করা হয়েছে বলে গ্রেফতারকৃতরা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। বুধবার দুপুরে নওগাঁ সদর মডেল থানা চত্বরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান।নিহত নাজিম উদ্দীন মাতবর (৬০) সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বিলভবানীপুর গ্রামের মৃত কছিম উদ্দিন ফকিরের ছেলে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন, গত সোমবার  (১০ জুন)  রাত সাড়ে ১১ দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বিল ভবানীপুর গ্রামের নিজ বাড়ির সন্নিকটে  নাজিম উদ্দিন মাতবরকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে  হাতুড়ি দ্বারা এলোপাথারি ভাবে মাথায় আঘাত এবং ধারালো চাকু দ্বারা উপুযুর্পুরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।  পরে নাজিমুদ্দিন কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে তাকে মৃত ঘোষণা করে ডাক্তার।

এঘটনায় নিহতর ছেলে সাইদুর ইসলাম বাদী হয়ে সোমবার রাতেই অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।

এদিকে মামলা দায়ের ও নিহতের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান পিপিএম এর তত্ত্বাবধানে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফৌজিয়া হাবিব খান এর নেতৃত্বে মাঠে নামে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ও বিভিন্ন সোর্সকে কাজে লাগিয়ে মঙ্গলবার রাতের মধ্যে এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে

হত্যাকাণ্ডের জড়িত  সুজ্জাত এবং মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার  করে। তাদের ূেয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও হাতুড়ি উদ্ধার করে পুলিশ।

সুজ্জাত জেলার সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বিল ভবানীপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে এবং মেহেদী হাসান জেলার পোরশা থানার গাঙ্গুরিয়া বাজার এলাকার মোঃ নজরুল ইসলামের ছেলে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান আরো জানান, গত প্রায় এক বছর পূর্বে নাপিত শ্রী প্রদীপ কুমার এর সেলুনে চুল কাটার বিষয় নিয়ে সুজ্জাত প্রদীপকে মারধর করে। পরবর্তীতে গ্রাম্য সালিসে নাজিম উদ্দিন মাতবরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে এবং সুজ্জাতকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং ওই বৈঠকে তাকে মারপিটও করা হয়। এতে সুজ্জাত ক্ষিপ্ত হয়ে নাজিমুদ্দিনকে বিভিন্ন সময় ভয়-ভীতি প্রদান করে এবং তার ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজতে থাকে। ঘটনার দিন পূর্বপরিকল্পনভাবে সুজ্জাত এবং মেহেদী হাসান নাজিমুদ্দিনকে হত্যার জন্য ওৎ পেতে থাকে এবং নাজিমুদ্দিন মাতবর অপর একটি বিচার শালিস করে মোটরসাইকেল নিয়ে আসা মাত্রই মেহেদী হাসান হাতুড়ি দ্বারা মাথায় আঘাত করলে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়ে নাজিমুদ্দিন ফকির পড়ে যায় তখন সুজ্জাত ধারালো চাকুদারা নাজিমুদ্দিন ফকিরকে উপুর-জুপরি বুকের নিচে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে যখম করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হচ্ছে বলেও জানায় পুলিশ।