ছিনতাইকারী গ্রেফতার

বগুড়ায় ছিনিয়ে নেওয়া যাত্রীবাহী বাস থেকে  লাফ দিয়ে এআইইউবি’র ছাত্রী নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ও শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৪ ১৮:৩৭ ।
দেশের খবর
পঠিত হয়েছে ১৭০ বার।



বগুড়ায় ছিনিয়ে নেওয়া একটি বাসের জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে সানজিদা স্বর্ণা নামে শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে জেলার শেরপুর উপজেলার ধনকুÐি এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। নিহত স্বর্ণনা আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এআইইউবি) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বগুড়া শহরের নিশিন্দারা উপ-শহর এলাকার বাসিন্দা ও বিআরটিসি  মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুর রউফের কন্যা। বাস ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ রনি মোল্লা নামে এক ব্যক্তিকে বগুড়া শহরের লিচুতলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

 


বগুড়ার শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, শাহ্ ফতেহ্ আলী পরিবহনের একটি বাস বুধবার সকাল ৬টায় ঢাকা থেকে  নওগাঁর উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ওই বাসে অন্যান্য যাত্রীর সঙ্গে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী স্বর্ণাও বগুড়ায় ফিরছিল। ওই একই বাসে যাত্রী বেশে রনি মোল্লাও ওঠে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাসটি শেরপুরে ‘ফুড ভিলেজ’ নামে একটি রেস্টুরেন্টে যাত্রা বিরতির জন্য থামে। তখন অন্য যাত্রীরা নামলেও স্বর্ণাসহ ৪ নারী যাত্রী এবং রনি মোল্লা বাসের ভেতরেই রয়ে যায়।

 


কিছু সময় পর রনি মোল্লা হঠাৎ ড্রাইভিং সিটে বসে ‘ট্রায়াল’ দেওয়ার কথা বলে বাসের ইঞ্জিন চালু করে ৫ যাত্রীকে নিয়ে ফুড ভিলেজ থেকে বের হয়ে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। অচেনা চালকের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো দেখে অজানা আতঙ্কে যাত্রীরা চিৎকার করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে আতঙ্কিত স্বর্ণা জানালা খুলে লাফ দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন স্বর্ণাকে উদ্ধার করে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

 


ওদিকে রনি দ্রæত গতিতে গাড়ি চালিয়ে বগুড়া শহরের লিচু তলা এাকায় একটি পেট্রোল পাম্পে এসে থামে। পরে সে বাস থেকে নেমে পাশেই তার বাড়িতে চলে যায়। বাস ছিনতাইয়ের খবর পেয়ে তৎপর শাজাহানপুর পুলিশ লিচুতলা এলাকায় সেই পেট্রোল পাম্পে গিয়ে বাসটিকে যাত্রীবিহীন অবস্থায় দেখতে পায়। পরে ড্রাইভিং সিটের নিচে পড়ে থাকা একটি মানিব্যাগের ভেতরে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে ছিনতাইকারী রনি মোল্লার সন্ধান পায়। পরে তাকে গ্রেফতার করে শেরপুর থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।

 


স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, রনি মোল্লার কথা অসংলগ্ন মনে হচ্ছিল। থানা হেফাজতে সে বার বার পুলিশকে গালিগালাজ করছিল। তবে শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, রনি মোল্লা পেশায় একজন ট্রাক ড্রাইভার। সে যাত্রী বেশে আব্দুল্লাহপুর থেকে শাহ্ ফতেহ আলী পরিবহনের ওই বাসে উঠেছিল। তিনি বলেন, পেট্রোল পাম্পে রাখা ওই বাসের ভেতরে আমরা ৩ নারী যাত্রীকে পাই। তাদের কাছ থেকে পুরো ঘটনার বর্ণনা পাই। 

 


শাহ্ ফতেহ্ আলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমিনুল ইসলাম জানান, রনি মোল্লা ড্রাইভার হলেও একজন পেশাদার ছিনতাইকারী। সে মাদক সেবী। একেক সময় একেক কথা বলছে। কেন সে আমাদের কোম্পানির বাস ছিনতাই করেছিল এমন প্রশ্নের জবাবে সে বলে, ‘ড্রাইভার, হেলপার, সুপারভাইজার কেউ ছিল না বলে আমি বাসটি চালিয়েছি।’ তিনি বলেন, তার কথায় মনে হয়েছে সে নিয়মিত মাদক সেবন করে। চাবি ছাড়া রনি মোল্লা কিভাবে বাসের ইঞ্জিন চালু করলো- এমন প্রশ্নের জবাবে শাহ্ ফতেহ্ আলী পরিবহনের এমডি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘যাত্রা বিরতি শেষে যাতে দ্রুত বাস চালিয়ে নেওয়া যায় সেজন্য চাবি স্টিয়ারিংয়ের পাশে একটি বক্সে রাখা থাকে।’ তিনি বলেন, যে বাসটি ছিনতাই করা হয়েছিল তার চালককে রনি মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা করতে বলা হয়েছে।’