বগুড়ায় কথিত তিন সাংবাদিককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিল স্থানীয় ছাত্র-জনতা

শেরপুর( বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:২০ ।
প্রধান খবর
পঠিত হয়েছে ৩৪৩ বার।

বগুড়ার শেরপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে কথিত তিন সাংবাদিককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় ছাত্র-জনতা। এসময় তাদের নিকট থেকে একাধিক পত্রিকার ভুয়া আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ওই সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রের আরো চার সদস্য পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে। এই ঘটনায় মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) সকালে শেরপুর থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের শুভলি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. ফারজানা ইসলাম বাদি হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।

আটক কথিত ব্যক্তিরা হলেন- জেলার গাবতলী উপজেলার মারিয়া গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে আব্দুল হালীম (৪০), বগুড়া সদর উপজেলার শিববাটি গ্রামের রোস্তম সেখের ছেলে মোক্তার সেখ (৩৯) ও শেরপুর শহরের উত্তরসাহাপাড়া মহল্লার সিরাজ উদ্দিন খানের ছেলে রায়হান পারভেজ কমল (৩৯)। এছাড়া মামলায় আটক ওই তিনজন ছাড়াও উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ঘোলাগাড়ী ঘুটুবটতলা গ্রামের মাসুদ রানাসহ (৩০) অজ্ঞাত দুই অজ্ঞাত আরো দুই-তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তবে বিকেলে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ বাকিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

মামলা সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত। এরই ধারাবাহিকতায় গত রবিবার (০১সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার হুসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দেন তারা। এরপর প্রধান শিক্ষক উম্মে কুলসুমের নিকট পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে বসেন। অন্যথায় তার স্কুলের অনিয়ম-দুর্নীতির খবর পত্রিকায় ছাপানোসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেন। একপর্যায়ে ওই প্রধান শিক্ষক তাদের এক হাজার টাকা প্রদান করেন। এরপর পাশের শুভ কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে সিএইচসিপি মাসুদ রানার কাছে বিশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। অন্যথায় তাকেও একই হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়। পরে মাসুদ রানা তাদেরকে এক হাজার পাঁচশ’ টাকা প্রদান করেন। পাশাপাশি ওই ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারি জাহানারা বেগমের নিকট দশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি মানহানীর ভয়ে তাদের পাঁচ হাজার টাকা প্রদান করেন। পরদিন বুধবার (০২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শুভলি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে একই কায়দায় প্রধান শিক্ষক ফারজানা ইসলামের নিকট বিশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে এই শিক্ষক চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। একপর্যায়ে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানতে পেরে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সেইসঙ্গে আব্দুল হালীম, মোক্তার হোসেন ও রায়হান পারভেজ কমলকে আটক করে গণধোলাই দেন। এসময় মাসুদসহ অন্যান্যরা কৌশলে পালিয়ে যান। পরে থানায় সংবাদ দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম রেজাউল করিম রেজা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এই ঘটনায় থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে আটককৃতদের মঙ্গলবার দুপুরেই বগুড়ায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ওই ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।