২ বছরেও পুরোপুরি মানা হয়নি ইউএনও’র নির্দেশনা

বগুড়ায় পাড়হীন গভীর পুকুরে ধ্বসে গেছে দিনমজুরের বসতবাড়ি

শাজাহানপুর( বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৫৯ ।
বগুড়ার খবর
পঠিত হয়েছে ১০৫ বার।

পাড় না ছেড়ে বসতবাড়ি ঘেঁষে গভীর করে পুকুর খনন করায় ধ্বসে পড়েছে রায়হান (৪০) নামের এক দিনমজুরের বসতবাড়ি। স্থানীয় ভাবে শালিশ বৈঠক করেও কোন লাভ হয়নি। বিপদ থেকে রক্ষা পেতে  উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ইউএনও) এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বার বার ধর্ণা দিচ্ছেন ওই দিনমজুর দম্পতি। ২ বছরেও পুরোপুরি মানা হয়নি ইউএনও’র নির্দেশনা।  


সমাজে দুর্বলের উপর সবলের নির্যাতনের এ ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার চোপীনগর ইউনিয়নের শাহনগর বিলাত পাড়া গ্রামে। দিনমজুর রায়হান (৪০) ওই এলাকার মৃত লছির উদ্দিনের ছেলে। তিনি বলেন, পাড় না রেখে ২০২২ সালের শুরুতে তার বসতবাড়ি ঘেঁষে গভীর ভাবে পুকুর খনন করেন প্রতিবেশি মৃত মোসলেম উদ্দিনের দুই ছেলে আব্দুল হালিম ও আজিজার রহমান। ওই গভীর পুকুরে ধ্বসে যায় তার ইটের তৈরি বসতবাড়ির দেয়াল। তিনটি কক্ষ চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেগুলো বসবাসের অনুপযোগি হয়ে পড়ে। প্রতিকার চেয়ে ইউএনও এবং ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন দিনমজুর রায়হান।

 

অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের নভেম্বরে ঘটনাস্থল সরেজমিন তদন্ত করেন ইউএনও আসিফ আহমেদ। তদন্ত শেষে দিনমজুরের বসতবাড়ির ক্ষতি নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ টাকা। ওই সময় পুকুর মালিককে গাইড ওয়াল নির্মাণ করে তদস্থলে মাটি ভরাটের নির্দেশ দেন ইউএনও। কিন্তু ইউএনও’র সে নির্দেশ আমলে নেয়নি পুকুর মালিক দুই ভাই। একপর্যায়ে ইউএনও আসিফ আহমেদ অন্যত্র বদলী হন।

শাজাহানপুরের নতুন ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন সাইদা খানম। দিনমজুর রায়হান ফের ধর্ণা দেন ইউএনও সাইদা খানমের দপ্তরে। এমতাবস্থায় শুনানীর জন্য ২৬ এপ্রিল’২৩ তারিখে বাদি ও বিবাদীকে নিজ কার্যালয়ে ডাকেন ইউএনও সাইদা খানম। শুনানী শেষে গাইড ওয়াল নির্মাণ ও মাটি ভরাটের জন্য পূর্ববর্তী ইউএনও’র নিদের্শনা বাস্তবায়নে বিবাদীদের তাগিদ দেন। ইউএনও’র কঠোর অবস্থানের মুখে বিবাদী গাইড ওয়াল নির্মাণ করে তদস্থলে যতসামান্য মাটি ভরাট করেন। ফলে ধ্বসে যাওয়ার ঝুঁকিতেই থেকে যায় রায়হানের বসতবাড়ি। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও রায়হানের বসতবাড়ি রক্ষায় ইউএনও’র নির্দেশা মোতাবেক মাটি ভরাটের কাজ আজও পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি।

এমতাবস্থায় দিনমজুর পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়ার পাশাপাশি ইউএনও’র বিচারিক কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অপরদিকে পূর্ব বিরোধের জের ধরে নিজেদের বসতবাড়ির ময়লা পানি রায়হানের ভাই ইব্রাহিমের পুকুরে ফেলতে গত ১৫ আগষ্ট পাইপ স্থাপন করে প্রতিপক্ষের লোকজন। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে রায়হান ও তার ছেলে লিটন কে মারপিটে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় শাহাবুল, টুটুল, খোকনসহ ৫ ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাজাহানপুর থানায় অভিযোগ করেন রায়হান।

 

অভিযোগের তদন্তকারি কর্মকর্তা শাজাহানপুর থানার এসআই ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, মারপিটের ঘটনাটি স্থানীয় ভাবে আপোস হয়েছে।