ডাকাতির সময় ফাঁকা মাঠে নিয়ে গৃহবধূকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৭
নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁর মহাদেপুরে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের পর গৃহবধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে ডাকাত দল। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার চকজামদই গ্রামের শরিফুল ইসলাম ওরফে পচা (২৯), একই গ্রামের তারেক হোসেন (২৬), বনসেতর গ্রামের সোলাইমান আলী (৩৮), জিনারপুর গ্রামের রিপন আলী (৩০), গৌড়রা বৌদ্দপুর গ্রামের ফারুক হোসেন (৩২), চককন্দর্পপুর গ্রামের সাগর হোসেন (১৯) ও বন্দীপুর গ্রামের রুবেল সরদার (২৮)। গ্রেফতারকৃত ৭ ব্যক্তির মধ্যে গত সোমবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে শরিফুল ইসলাম ও ফারুক হোসেনকে গ্রেফতার করে মহাদেবপুর থানা পুলিশ। অন্যদের পূর্বেই গ্রেফতার করা হয়। পূর্বে গ্রেফতার পাঁচ সদস্যের মধ্যে সাগর হোসেন, তারেক হোসেন ও রিপন আলী আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবাবন্দি দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, সংঘবদ্ধ ডাকাতদের একটি দল গত ৯ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে মহাদেবপুর উপজেলার একটি বাড়িতে ডাকাতির উদ্দেশ্যে ঢোকেন। ওই বাড়িতে ঢুকে প্রথমে তারা বাড়ির সদস্যদের মুখ, হাত-পা বেঁধে রেখে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও একটি মোবাইল ফোন লুট করে। স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুট করে যাওয়ার সময় ওই বাড়ির গৃহবধূকে বাড়ি তুলে নিয়ে যায়। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে একটি খোলা মাঠে গৃহবধূকে ডাকাতরা পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। থানা পুলিশ খবর পর ওই দিন রাতেই ভুক্তভোগী গৃহবধূকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পর দিন মহাদেবপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩৯৫ ও ৩৯৭ ধারায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, শুরুর দিকে এই ঘটনা পুলিশের কাছে ক্লুলেস একটি ঘটনা ছিলো। ডাকাতদের গ্রেফতার ও লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়ব্রত পালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়। তদন্তে নেমে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় মহাদেবপুর থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দুটি ধারালো হাসুয়া উদ্ধার করা হয়েছে। ওই তিনজন আদালতের কাছে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। পরে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আরও চারজনকে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার করা হয়। সর্বশেষ গত সোমবার দিবাগত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, ফারজানা হোসেন ও জয়ব্রত পাল এবং মহাদেবপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসমত আলী উপস্থিত ছিলেন।