দুপুর ১টায় কী ঘটতে চলেছে গাজায়?
পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
দীর্ঘ ১৫ মাসের ইসরাইলি আগ্রাসনের পর অবশেষে গাজায় কার্যকর হয়েছে যুদ্ধবিরতি। রোববার (১৯ জানুয়ারি) ফিলিস্তিনি সময় বেলা সোয়া ১১টা (বাংলাদেশি সময় দুপুর সোয়া ৩টায়) যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে প্রথম দিন তিনজন নারী জিম্মিকে মুক্তি দেবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তাদেরকে দেশটির স্থানীয় সময় বিকাল ৪টার পরে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
এদিকে ইরানের বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীর (আইআরজিসি) কুদস ফোর্সের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসমাইল ঘানি জানিয়েছেন, রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটবে। যা দখলদার সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা প্রকাশ করবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসমাইল ঘানি রোববার সকালে লেবাননের আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় অবিচল থাকা চিকিৎসক এবং নার্সদের স্মরণ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি চিকিৎসক এবং নার্সদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘প্রতিরোধ কেবল যুদ্ধক্ষেত্রে নয়; চিকিৎসা ক্ষেত্রেও আপনার কাজ প্রতিরোধের একটি উদাহরণ। আপনারা যে অনুশীলন করেছেন, সেটি ছিল সবচেয়ে সঠিক উদাহরণ’।
গাজায় ইসরাইলি শাসন এবং ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৫ মাসের অন্তহীন অপরাধের পর, দখলদার সরকারের রক্তপিপাসু, নারী ও শিশু হত্যাকারী শাসকরা একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে বাধ্য হয়েছে। এই যুদ্ধবিরতি মূলত তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে’।
ইরানি এই জেনারেল এ সময় উল্লেখ করেন যে, ‘এই যুদ্ধবিরতি দুপুর ১টায় (স্থানীয় সময়) কার্যকর হবে এবং বন্দি বিনিময় বিকাল ৪টায় সম্পন্ন হবে’।
এদিকে এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় জিম্মি তিন বন্দিকে স্থানীয় সময় বিকাল ৪টার পরে মুক্তি দেওয়া হবে। আরও চারজন জীবিত নারী জিম্মিকে সাত দিনের মধ্যে মুক্তি দেওয়া হবে।
যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী, ছয় সপ্তাহের মধ্যে গাজা থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করা হবে এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফিরিয়ে আনা হবে।
চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতি চলাকালে প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক ভর্তি মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশ করবে। এর মধ্যে ৫০টি ট্রাকে জ্বালানি থাকবে এবং ৩০০ ট্রাক উত্তর গাজার জন্য বরাদ্দ করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরাইল। রোববার (১৯ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
তবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপে যেসব জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে, তাদের নামের তালিকা না দেওয়া পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হবে না বলে জানান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
রোববার বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, প্রধানমন্ত্রী ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন, যতক্ষণ না হামাস মুক্তি দিতে চাওয়া জিম্মিদের তালিকা দিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি শুরু হবে না।
পরে হামাস ওই জিম্মিদের তালিকা প্রকাশ করলে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘোষণা দেয়, গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হবে স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১টায় (বাংলাদেশি সময় দুপুর সোয়া ৩টা)। পরে সেই সময়ও পিছিয়ে দেওয়া হয়, দুপুর ১টায়। সূত্র: মেহের নিউজ ও রয়টার্স