যে গ্রামে নেই রাস্তা-স্কুল কিংবা মসজিদ
পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে বিলের মাঝে অবস্থিত ছোট্ট গ্রাম ধৈয়ামুড়ি। শতবছরী এ গ্রামে নেই কোনো রাস্তা। নেই বিদ্যালয়ও। এমনকি নেই মসজিদও। রাস্তা, বিদ্যালয় ও মসজিদের জন্য তাদের যেতে হয় পার্শ্ববর্তী গ্রামে। তাও আবার কাদা ও পানি পার হয়ে। এতে ভোগান্তিতে রয়েছে সেখানকার মানুষেরা। জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিলেও সেটি আশ্বাসেই থেকে যায়, হয় না কোনো কিছুই। এতে আক্ষেপ বাড়ছে গ্রামটির জনগণের মাঝে।
জানা গেছে, প্রায় শত বছর আগে মাঝিগাছা গ্রাম থেকে এসে কয়েকটি পরিবার এখানে বাস করা শুরু করে। শতবর্ষী এ গ্রামটিতে বর্তমানে আটটি পরিবার বাস করে। মোট জনসংখ্যা ৪৩ জন, যার মধ্যে ভোটার ২৪ জন। কৃষি নির্ভর এ গ্রামটির বাসিন্দাদের উন্নয়ন বঞ্চিত হয়ে দুর্ভোগ-দুর্দশার মধ্য দিয়ে জীবন চালাতে হচ্ছে।
গ্রামবাসীরা জানান, রাস্তা না থাকায় তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বছরের ছয় মাস কাদা-পানি পার হয়ে চলাচল করতে হয়। আর বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌকা।
রাস্তা ও বিদ্যালয় না থাকায় গ্রামটির শিশুদের দুর্ভোগ নিয়ে যেতে হয় পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুলে। শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষদেরও চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় প্রতিনিয়ত। নানামুখী সমস্যা মাথায় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন এখানকার মানুষ। এসব সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে গ্রামটি ছেড়েছে অনেকে।
গ্রামটির বাসিন্দা আমিন মোল্লা,আব্দুস সামাদ,শাহীন মোল্লা, লাইলী বেগম, শিউলী বেগম ও আর্শাদ মোল্লা জানান, যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় তাদের সন্তানদের শিক্ষাগ্রহণ কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে অনেকেই গ্রাম ছেড়ে শহরের দিকে চলে যাচ্ছেন।
তারা বলেন, স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ না থাকলেও আমাদের মূল সমস্যা হলো যাতায়াতের রাস্তা। জন্মের পর থেকে কখনো কোনো মন্ত্রী, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান বা ইউপি চেয়ারম্যানকে এই গ্রামে আসতে দেখিনি। মাঝে মাঝে ইউপি সদস্য প্রার্থীরা দূর থেকে প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তীতে কেউ কথা রাখেনি।
সরকারি খাস জমি (হালট) থাকলেও কেউ রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি। দ্রুত রাস্তা নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে বিতারা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সম্প্রতি এই ইউনিয়নে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছি। বিলের মাঝে একটি গ্রাম আছে বলে শুনেছি। খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’