নওগাঁয় গুচ্ছগ্রামের খাল জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:১২ ।
প্রতিবেশী জেলা
পঠিত হয়েছে বার।

নওগাঁর বদলগাছীতে গুচ্ছগ্রামের খাল দখল করে জোরপূর্বক মাছ ছাডার অভিযোগ উঠেছে সাবেক এক ইউপি সদস্য ও স্থানীয় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। এতে হতদরিদ্র গুচ্ছগ্রামবাসিরা অধিকার থেকে বঞ্চিতের পাশাপাশি খালে হাঁস পালন ও গরু ছাগল চড়ানো নিয়ে পরেছে চরম বিপাকে। অসহায় গুচ্ছবাসীরা অবিলম্বে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে খালটি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবী জানিযেছে।

জানা যায়, নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার  কোলা ইউনিয়নের বনগ্রাম গুচ্ছগ্রাম। গুচ্ছগ্রামটিতে ২৭০টি ঘরে ১৬০ পরিবারের বসবাস। গুচ্ছগ্রামটি গড়ে ওঠার পর হতে ১২ বছর যাবত  চারিপাশের খাল ভোগদখল করে আসছেন সেখানে বসবাসরত হতদরিদ্র বাসিন্দারা। চলতি বছরের ঢলের পানিতে কচুরিপানা খালে ঢুকলে গুচ্ছগ্রামের সমিতি হতে ৫ হাজার টাকার কিটনাশক দিয়ে খালটি পরিস্কার করে মাছ ছাড়ার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু হঠাৎ করে কাউকে কিছু না জানিয়ে মাছ এনে ছেড়ে দিয়ে জোরপূর্বক খালটি দখল করে কোলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক  সদস্য ও স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি ফারুক হোসেন।


গুচ্ছগ্রামের সভাপতি আব্দুল জব্বার   বলেন, আমরা বিগত ১২ বছর থেকে এই খালে মাছ চাষ করে সকলে মিলে ভাগ বাটোয়ারা করে খেয়ে আসতেছি। এবারও আমরা ৫ হাজার টাকার কিটনাশক কিনে খালের কচুরিপানা মারার জন্য দিয়েছি। পরে সকলে মিলে খালটি পরিষ্কার করেছি মাছ ছেড়ে দেওযার এজন্য। কিন্তু হঠাৎ করে ফারুক মেম্বার এসে জোর জবরদস্তি করে মাছ ছেড়ে দিয়েছে। আমাদের এখনো পর্যন্ত কিছু বলা হয় নাই।


সাধারণ সম্পাদক দুলাল হোসেন বলেন,  আমরা এই খালটি গুচ্ছগ্রামের সকলে মিলেমিশে এ যাবত পর্যন্ত ভোগ দখল করে আসছি।  হঠাৎ করে ফারুক মেম্বার কাউকে না বলেই মাছ ছেড়ে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন,আমরা শুনেছি ওই খালের মধ্যে ফারুক মেম্বারের ২ শতাংশ জমি রয়েছে, তাই বলে তিনি ১০ বিঘা আয়তনের খাল দখল করে নিতে পারেন না। এটি ভূমিহীনদের জায়গা, আমাদের অধিকার বাস্তবায়নে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দার  বিলকিস বানু ও সুমি আক্তার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খালে মাছ চাষ ও হাঁস পালনসহ সাংসারিক নানা কাজে পানি ব্যবহার করে আসছি।  কাউকে কিছু না জানিয়ে, হঠাৎ করে ফারুক মেম্বার খালটি তার দাবি করে মাছ ছেড়ে দিয়েছে। আমরা গুচ্ছ গ্রামবাসী আমরা অসহায় প্রশাসন সহ এলাকার সচেতন মহল এগিয়ে না আসলে এই গুচ্ছগ্রামে আমাদের বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে।  

তবে বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন বলেন, এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন  গুচ্ছগ্রামটির ভিতরে আমার ও হাসান চৌধুরীর ৪১ শতাংশ জমি ঢুকে আছে। খালটি পূর্ব থেকেই আমার দখলে ছিল।  খালের মধ্যে আমার জমি আছে সেজন্য মাছ ছেড়েছি। তাতে জোর খাটানোর কি আছে। আমার জমিতে আমি মাছ ছাড়ব এতে গুচ্ছগ্রামবাসী কেন, প্রশাসনকেও জানানোর প্রয়োজন আমি বলে মনে করছি না।


বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান ছনি বলেন, গুচ্ছগ্রামটি মূলত সরকারীই জায়গা। তবে কাগজপত্র না দেখে মন্তব্য করতে পারছি না। গুচ্ছগ্রামের পক্ষ হতে কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।