বগুড়ায় মামলা তুলে নিতে তরুণী অপহরণ, ফের মামলা দায়ের
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামিরা মামলা তুলে নিতে দ্বাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা বাদি হয়ে গতকাল দুপুরে শেরপুর থানায় আরো একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অপহৃত তরুণীর নাম মোছাঃ আতিয়া খাতুন (১৮)। তিনি উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নের হাপুনিয়া কলোনী গ্রামের আমন উল্লাহর মেয়ে। পাশাপাশি শেরপুর উপজেলার একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মামলার আসামীরা হলেন মোঃ মাহমুদুল হাসান সাব্বির (২১), মোছাঃ রিক্তা (৪৫), মোঃ রনি (২৫), মোঃ রাকিব (১৮), মোঃ আকাশ (১৮), মোছাঃ স্বপ্না (৩৫), মোঃ শামিম (৪০), মোছাঃ জরিনা বেগম (৬০)। এছাড়াও অভিযোগে অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রধান আসামি মাহমুদুল হাসান সাব্বির দীর্ঘদিন ধরেই আতিয়াকে উত্ত্যক্ত করছিলেন। এর প্রতিবাদে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে আতিয়ার মা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন, যার প্রেক্ষিতে পুলিশ চার্জশিটও জমা দেয়। কিন্তু জামিনে মুক্ত হয়ে অভিযুক্তরা আবারও তরুণী ও তার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে থাকে। ঘটনার দিন ১১মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কোচিং শেষে বাসায় ফেরার পথে গাড়িদহ ইউনিয়নের মহিপুর ঢালাই ব্রিজের কাছে তরুণীকে অপহরণ করা হয়। ৫ নম্বর আসামি মোঃ আকাশ অটোরিকশা নিয়ে গিয়ে ওই গাড়ীতে তোলেন। এরপর সাব্বির ও রাকিব রিকশায় উঠে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই তরুণীটিকে নির্জন বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে মুখ বেঁধে আটকে রেখে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। একইসঙ্গে তার মোবাইল ফোন, স্বর্ণালঙ্কার, স্কুলব্যাগ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তাকে একটি অজ্ঞাত মাইক্রোবাসে তুলে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরানো হয় এবং জোরপূর্বক ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে। মেয়েটি রাজি না হলে তাকে ছুরি দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে কিল-ঘুষি মারে এবং গুরুতর শারীরিক নির্যাতন করে। একপর্যায়ে মহিপুর এলাকার 'কি নাম প্লাস' নামক হোটেলের সামনে চালক গাড়ি থামিয়ে দরজা খুলে দিলে আতিয়া চিৎকার শুরু করেন। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে আতিয়ার পরিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদান করেন। শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, “অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।