বগুড়ায় মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে জাল দলিলে জমি দখলের অভিযোগ

ধুনট( বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫ ১৭:৫৭ ।
বগুড়ার খবর
পঠিত হয়েছে ৮৮ বার।

বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকায় মৃত মোজাম্মেল হক ফকির নামে এক ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে ১৯ শতক জমির জাল দলিল তৈরী করে বেদখলের অভিযোগ উঠেছে তার শ্যালকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মৃত মোজাম্মের হকের সন্তানেরা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মোজাম্মেল হক পৌর এলাকার পশ্চিম চান্দাপাড়া গ্রামের রবিয়া ফকিরের ছেলে।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধুনট মৌজার পৌর এলাকায় পশ্চিম চান্দারপাড়া গ্রামে ১৯ শতক জমির ওপর প্রায় ৫০ বছর আগে বাড়ি নির্মান করেছিলেন মোজ্জাম্মেল হক। ওই বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে মোজাম্মেল হক বসবাস করতো। এ অবস্থায় ১৯৯২ সালের ৯ মার্চ মোজাম্মেল মৃত্যু বরণ করেন। তখন ওই পরিবারের দায়িত্ব নেন সাইফুল ইসলাম। ওই সময় মৃত মোজাম্মেলের হতদরিদ্র ৬ সন্তান জীবিকার তাগিদে ঢাকায় অবস্থান করতো। এ সুযোগে সাইফুল ইসলাম কৌশলে মৃত মোজাম্মেল হককে জীবিত দেখিয়ে ১৯৯৫ সালে ২টি, ১৯৯৬ সালে ২টি, ২০০২ সালে ১টি ও ২০০৩ সালে ১টি মোট ৬টি জাল দলিল নিবন্ধনের মাধ্যমে ১৯ শতক জমি নিজের নামে নেন।

এ অবস্থায় ২০১১ সালের ৭নভেম্বর মোজাম্মেল হকের স্ত্রী হাজরা খাতুন মৃত্যু বরণ করেন। এসময় মোজাম্মেল হকের সন্তানেরা ঢাকা থেকে গ্রামে ফিরে এসে মামা সাইফুল ইসলামকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যেতে বলেন। তখন সাইফুল ইসলাম দাবি করেন ওই ১৯ শতক জমি মোজাম্মেল হকের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন। মৃত মোজাম্মেল হকের সন্তানেরা জাল দলিলের বিষয়টি টের পেয়ে ২০২৩ সালের ১৫ জুন বগুড়ার ধুনট সহকারী জজ আদালতে মামলা (মামলা নং ১৩২) দায়ের করে। এদিকে জাল দলিল টিকে রাখার জন্য সাইফুল ইসলাম ২০২৪ সালের ৯ জুলাই ধুনট পৌরসভা থেকে মোজাম্মেল হকের নামে ভুয়া মৃত্যু সনদ তৈরী করে নেন। ওই সনদে মোজাম্মেল হককে ২০০৩ সালের ১৭ নভেম্বর মৃত দেখানো হয়েছে।

এ বিষয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, ভগ্নিপতি মৃত্যুর আগে আমার নামে জমি দলিল করে দিয়েছেন। তারপরও তার সন্তানেরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন। আমি আইনী ভাবে এ বিষয়টি মোকাবেলা করছি। তবে পৌরসভা থেকে মোজাম্মেল হকের নামে তাকে মৃত্যু সনদটি পাইয়ে দিয়েছেন ফোরহাদ হোসেন নামে সাবেক এক কাউন্সিলর।

এ বিষয়ে মৃত মোজাম্মেল হকের মেয়ে রহিমা খাতুন বলেন, জাল দলিল তৈরী করে আমাদেরকে বাবার জমি থেকে বঞ্চিত করেছে। ওই জমি উদ্ধারের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেছি। কিন্ত এই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মামা চাপ সৃষ্টি করেছেন। জাল দলিল ও ভুয়া মৃত্যু সনদ তৈরীকারীদের শাস্তি দাবি করছি।

ধুনট পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনুর আলম বলেন, মোজাম্মেল হকের নামে কোন মৃত্যু সনদ ইস্যু করা হয়নি। তবে পৌরসভার সই-সীল ব্যবহার করে কিভাবে তারা এই মৃত্যু সনদ তৈরী করেছেন তা জানা নেই।