নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সংস্কার কাজে ধীরগতি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কোটি টাকা জরিমানা
পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
৩ দফা মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজ। কাজে ধীরগতির ফলে বৃষ্টি হলেই মহাসড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। শুষ্ক মৌসুমে ধুলোবালিতে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন এ রুটে চলাচল করা উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। এমন অবস্থায় নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে করা হয়েছে কোটি টাকা জরিমানা।
চলনবিলের সবুজ মাঠের বুক চিরে চলে গেছে নাটোর-বগুড়া মহাসড়ক। উত্তরের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে কয়েক হাজার যানবাহন।
অথচ সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজ শেষ না হওয়ায় এমন দুর্ভোগের চিত্র নিত্যদিনের। নাটোর অংশে ৩১ কিলোমিটারের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সিংড়া বাস টার্মিনাল থেকে জামতলী পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার রাস্তা। একটু বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় যানজট। বাড়ে দুর্ভোগ। এছাড়াও বড় বড় খানাখন্দের কারণে প্রায়ই বিকল হচ্ছে যানবাহন।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তার এ অবস্থার জন্য চলাচলে সমস্যা হয়। গাড়ি চালাতে গেলে হাত ফুলে যায়। দ্রুত সংস্কার হয়ে গেলে যাতায়াত সহজ হবে বলে দাবি স্থানীয়দের।
২০২০ সালে মহাসড়কের নাটোর অংশে শুরু হয় সড়ক সম্প্রসারণ ও সংস্কার কাজ। যার ব্যয় ধরা হয় ৩৯০ কোটি টাকা। তবে, তিন দফা মেয়াদ বাড়িয়েও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায়. সড়ক বিভাগের ওপর দায় চাপিয়ে ঠিকাদার জানান, আসছে ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে সব কাজ।
ঠিকাদার মীর হাবিবুল আলম বলেন, ‘আমাদের কাজের মেয়াদ ছিলো ১৮ মাস। কিন্তু মেয়াদ না থাকার কারণে আমাকে ১৮ মাস দিতে পারেনি। এখনো ৪ মাস পাওনা আছে। এ কারণে আমরা একটু পিছিয়ে গেছি। তবে এখন আমাদের মূল স্ট্রাকচারের কাজ হয়ে গেছে তাই আমরা আশা রাখি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন হয়ে যাবে কাজটি।’
অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগে প্রভাব খাটিয়ে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ করেছেন ঠিকাদার মীর হাবিবুল আলম। কিন্তু কোন কাজই নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এমন অবস্থায় তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে কোটি টাকা জরিমানা করার কথা জানায় সড়ক বিভাগ।
নাটোর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান সরকার বলেন, ‘এরইমধ্যে আমরা কয়েক দফা জরিমানার বিষয়টি ঠিকাদারকে জানিয়েছি। ঠিকাদার যদি তার ব্যবস্থা না নেয় এবং কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী যদি কাজটি সমাপ্ত করতে ব্যর্থ হয়, সেই সাথে প্রজেক্টটি যদি নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আমরা আইনগতভাবে তাকে আমরা জরিমানা আরোপ করবো।’
নাটোর-বগুড়া মহাসড়ক শুধু স্থানীয় নয়, দেশের উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। কিন্তু ধীরগতির কাজের কারণে বিকল হচ্ছে যানবাহন। তবে, সময়মতো কাজ শেষ না হলে অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে ভোগান্তিও বাড়বে আরও।