রাণীনগরে বিরল রোগে আক্রান্ত লালমনকে আর্থিক সহায়তা
কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর রাণীনগরে বিরল (এমএনডি) রোগে আক্রান্ত বাকপ্রতিবন্ধী মো. লালমনকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ইউএনও’র কার্যালয়ে লালমনের হাতে ১৫ হাজার টাকার চেক তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাকিবুল হাসান। উপজেলা পরিষদের ফান্ড থেকে তাকে এই আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
বিরল রোগে আক্রান্ত বাকপ্রতিবন্ধী মো. লালমনকে নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তা নজরে আসে উপজেলা প্রশাসনের।
বিরল রোগে আক্রান্ত মো. লালমন উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের রাতোয়াল শোলাপাড়া গ্রামের দিনমজুর আমজাদের ছেলে। দিন যতই যাচ্ছে ততই দুর্বল হয়ে পড়ছে দুই সন্তানের জনক লালমন। দেশে বিরল এই রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা সজলভ্য না হওয়ার কারণে অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছে না তার দরিদ্র পরিবার। লালমনের উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন লালমনের পরিবার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাকিবুল হাসান বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর লালমনের বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। খোঁজখবর নিয়ে লালমনকে সরকারের পক্ষ থেকে ১৫ হাজার টাকা সহায়তা করেছি।
লালমনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, লালমনরা উপজেলার রাতোয়াল শোলারপুকুর পাড়ে খাস জমিতে বসবাস করে। পরিবারের উপার্জনক্ষম মানুষ হচ্ছে লালমন ও তার বাবা। তারা দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালায়। লালমন ছোটবেলা থেকেই ভালোভাবে কথা বলতে পারে না। অনেকটা ইশারার মাধ্যমে ভাষা প্রকাশ করে। লালমন দিনমজুরের কাজ করতো। এর মধ্যে লালমন বিয়ে করে। তার পরিবারে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান আছে। কিন্তু গত এক বছর যাবত লালমন শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। কাজকর্ম করতে পারে না। লালমনের হাত ও পায়ের আঙ্গুলের মাংস শুকিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে লালমন ভালোভাবে দাঁড়াতে পারছেন না। এরপর ঢাকা-রাজশাহীসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসার চেষ্টা করা হলেও ডাক্তাররা জানায়- দেশে এমন বিরল রোগের উন্নত কোন চিকিৎসা নেই। পরবর্তীতে ঢাকায় চীনের আকুপাংচার সেন্টারে যোগাযোগ করা হলে তারা দুই মাসের থেরাপির জন্য দুই লাখ টাকা চায়। কিন্তু এতোগুলো টাকা লালমনের দরিদ্র দিনমজুরের পরিবারের পক্ষে যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। বর্তমানে লালমনের পরিবারে চরম অর্থসংকট দেখা দিয়েছে।
লালমনের মা লাইলি জানান, দিনমজুরের কাজ না করলে সংসার চলে না। গরীব পরিবারে আল্লাহ কেন এমন বিরল রোগ দিলো। তবুও আমরা সাধ্যমতো ছেলের চিকিৎসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দেশে এই জটিল রোগের চিকিৎসা না থাকার কারণে অর্থের অভাবের কারণে আর চিকিৎসা করাতে পারছি না। বর্তমানে একজন মানুষের আয়ে সংসার কোন মতো জোড়াতালি দিয়ে চলছে। তাই সরকারসহ সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে হয়তো বা লালমন সুস্থ্য হয়ে উঠতো।