স্বাধীনতার পর ঐক্যের অভাবেই আমরা পিছিয়ে পড়েছি- ভিসি ববিপ্রবি
স্টাফ রিপোর্টার
স্বাধীনতার পর আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত ঐক্য প্রদর্শন করতে পারিনি এ কারণেই দেশ হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছি। এর একটি জ্বলন্ত উদাহরণ বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০১ সালের আইনে বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম অনুমোদিত হলেও দীর্ঘদিন ধরে তা কেবল নামেই সীমাবদ্ধ ছিল, দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় বগুড়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বগুড়া প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. কুদরত-ই-জাহান।
তিনি বলেন, “আমরা যারা দায়িত্বশীল অবস্থানে রয়েছি, তারাও সমাজের জন্য উল্লেখযোগ্য দৃশ্যমান অবদান রাখতে পারিনি। দায়িত্বশীলরা যদি যথাযথভাবে ভূমিকা রাখতে পারতাম, তাহলে সমাজব্যবস্থা আরও অনেক উন্নত হতো।”
ভিসি আরও বলেন, সমাজে সমতা, ঐক্য ও দায়িত্ববোধের ঘাটতি রয়েছে। বিভাজন, সঠিক নেতৃত্বের সংকট এবং একে অপরকে এগিয়ে নেওয়ার মানসিকতার অভাব আমাদের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।
স্বাধীনতার সময়কার নেতৃত্বের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা এমন একজন নেতাকে পেয়েছিলাম, যিনি সঠিক পথ চিনতেন এবং দৃঢ় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে শুরুতেই আমরা তাকে হারিয়েছি। ভবিষ্যতে সঠিক পথে এগিয়ে যেতে হলে আবারও তেমন দূরদর্শী নেতৃত্ব প্রয়োজন, যা আমাদের মধ্য থেকেই উঠে আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, গত ৪ জুন তিনি ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের সময় বিশ্ববিদ্যালয়টি আগের অর্থবছরের বাজেট পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত ছিল না। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যথাযথভাবে জমা দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৩ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করে ইতোমধ্যে একাডেমিক বিষয় অনুমোদন পেয়েছে। অথচ তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর মাত্র পাঁচ মাস সময় পেয়েছেন, যার মধ্যে তিন মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। ফলে স্বল্প সময়ে নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
তবে আশাবাদ ব্যক্ত করে ভিসি বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দুটি একাডেমিক বিষয়ের অনুমোদন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আগামী ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে অনুমোদন পাওয়া গেলে চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব আমার কাছে একটি আমানত। আমি যে সততা ও স্বচ্ছতা নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি, সেই নীতিতেই দায়িত্ব শেষ করতে চাই। দায়িত্ব পালন শেষে যেন আমার নাম নিয়ে কোনো বিতর্ক বা প্রশ্ন না ওঠে এটাই আমার প্রত্যাশা।”
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, বগুড়া প্রেসক্লাব এর সভাপতি রেজাউল হাসান রানু, সাধারণ সম্পাদক কালাম আজাদ, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সভাপতি গনেশ দাস, সাবেক সভাপতি মীর সাজ্জাদ আলী সন্তোষ, মতিউল ইসলাম সাদী, সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুর রহীম বগরা, সবুর শাহ লোটাস, মীর্জা সেলিম রেজা, সাইফুল ইসলাম, আব্দুল ওয়াদুদ, সুমন সরদার, মমিন রশিদ সাইন, সাহাদত সাহিনসহ অন্যান্যরা। এ সময় বগুড়া প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।