আত্রাইয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মসজিদে চলছে নামাজ আদায়: ১২লক্ষ টাকা ফেরত পেতে সাবেক সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ)
প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৩ ১৭:২৪ ।
প্রতিবেশী জেলা
পঠিত হয়েছে ১৪ বার।

 নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মনিয়ারী ইউনিয়নের ধর্মপুর জামে মসজিদে মসল্লিরা নামাজ আদায় করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে । মসজিদের প্রায় ১২লক্ষ টাকা ক্যাশ ফেরৎ না দেয়ায় সংস্কার কাজ করতে পারছেননা মসল্লিরা। তবে ১২ লক্ষ টাকা ক্যাশ ফেরৎ পেতে গ্রামবাসি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন । এতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ।  

ধর্মপুর জামে মসজিদ কমিটির বর্তমান সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,১৯৭৩ সালে চার শতাংশ জায়গার উপর গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তি বর্গের উদ্যোগে মসজিদ নির্মান করা হয়। পরবর্তিতে মসজিদটি পূর্ণনির্মানের প্রয়োজন হলে গ্রামের লোকমান প্রামানিকসহ তিনজন ব্যক্তি আরো দেড় শতক জায়গা মসজিদে দান করেন। এর পর মসজিদটিতে একতলা ভবন নির্মান করা হয়। মসজিদ নির্মানের পর থেকে গ্রামের এবং এলাকার লোকজনের দানে এপর্যন্ত প্রায় ৭বিঘা ধানী জমি রয়েছে। এরই মধ্যে গ্রামের আব্দুল মান্নান মসজিদ কমিটির সভাপতি এবং নাছির উদ্দীন সাধারণ সম্পাদক ও  ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব নিয়ে প্রায় ১৫-১৬বছর ধরে মসজিদটি পরিচালনা করেছেন। এসময়ের মধ্যে মসজিদের পক্ষ থেকে জমি বন্ধক,বিভিন্ন জলাশয় লিজ নিয়ে এবং বিভিন্ন লোকজনের দান করা অনুদানসহ প্রায় ১০ থেকে ১২লক্ষ টাকা ক্যাশ হয়েছে। এরই মধ্যে নির্মিত মসজিদটির বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরায় এবং কিছু জায়গা ভেঙ্গে যাওয়ায় গত বছর মসজিদটি পূর্ন নির্মানের উদ্যোগ নেয় মসল্লিরা। কিন্তু নির্মিত মসজিদের জায়গার দাগ নম্বর ভুল আছে,এমন অযুহাতে ওই কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকসহ কিছু ব্যক্তি হিসাব-নিকাশ এবং মসজিদের কাগজপত্র বুঝে না দিয়ে হঠাৎ করেই টিনের বেড়া দিয়ে গ্রামে আরো একটি  নতুন মসজিদ নির্মান করে। মোস্তাফিজুর আরো অভিযোগ করে বলেন, আমরা মসল্লিরা বার বার সভাপতি-সম্পাদককে তাগাদা দিয়ে কোন ফল হচ্ছেনা। কোন ভাবেই তারা টাকা ফেরৎ দিচ্ছেননা। ফলে মসজিদটি সংস্কার করতে পারছিনা। যে কোন মূহুর্তে মসজিদটি ধ্বসে পরে বড় ধরণের দূর্ঘটা ঘটতে পারে। তার পরেও মসল্লিরা বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ঝুঁকিপূর্ণ মসজিদেই নামাজ আদায় করছেন। এঘটনায় টাকা ফেরৎ পেতে মনিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদে একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। কয়েক দফা তারিখ দিয়েও ওই পক্ষ হাজির না হওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান সমাধান করতে পারেননি। ফলে সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষে বাধ্য হয়ে গ্রামের ৫৪জন মসল্লির স্বাক্ষরীত একটি অভিযোগ পত্র গত বৃহস্পতিবার আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দাখিল করেছি। মসল্লিরা দ্রæত এঘটনার শান্তিপূর্ন সুষ্ঠু সামাধান চান।

জানতে চাইলে মসজিদ কমিটির সাবেক সম্পাদক ও ক্যাশিয়ার নাছির উদ্দীন বলেন,মসজিদের জায়গার দলিলে একটু ভুল থাকায় মসল্লিদের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। ফলে নতুন আরো একটি মসজিদ নির্মান করতে হয়েছে।

 

তিনি বলেন,১০-১২লক্ষ টাকা নয়,৮লক্ষ ২২হাজার টাকা আমাদের কাছে আছে। গত এক সপ্তাহ আগে বসে ওই টাকা থেকে তিন ভাগের দুই ভাগ পুরাতন জামে মসজিদ এবং এক ভাগ টাকা আমাদের নতুন মসজিদ পাবে এমনটি সমাধান করে দিয়েছিল গন্যমান্য লোকজন,কিন্তু অভিযোগকারীরা তা না মানায় টাকাগুলো সমাজে গচ্ছিত রাখা আছে। যে কোন সময় সুষ্ঠু সমাধান হলেই টাকাগুলো হস্তান্তর করা হবে।  

 

আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলাম বলেন,এঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।