ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন

বগুড়ায় চেলোপাড়া বস্তিতে আগুনঃ ১৪টি বাড়ি ভস্মিভূত

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৪ ১৮:১১ ।
দেশের খবর
পঠিত হয়েছে ৩৭ বার।

বগুড়া শহরে চেলোপাড়া এলাকায় রেল লাইন সংলগ্ন বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে সেখানে বসবাসকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মুসলিম উদ্দিন এবং তার ৮ সন্তানের ১০টি ঘরসহ অন্তত ১৪টি বসত-বাড়ি পুড়ে গেছে। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে কেউ হতাহত না হলেও আগুনে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্রসহ কয়েক লাখ টাকার মালামাল ভস্মিভূত হয়েছে। 


ক্ষতিগ্রস্ত ১৪টি পরিবারের প্রত্যেককে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ২৮ কেজি করে চাল, ডাল, চিনি এবং তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। এসবের পাশাপাশি তাদেরকে ৫টি করে কম্বলও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অধিক ক্ষতিগ্রস্ত ৯টি পরিরবারের প্রতেককে ২ বান ঢেউটিন ও নগদ ৬ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।


রেললাইন বস্তির অপর দিকের চাষী বাজারের ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম জানান, দুপুর ১২টার দিকে বাজারের উত্তর দিকে বস্তির দিকে কালো ধোঁয়া দেখা যায়। এর পর পরই দাউ দাউ আগুনে সবকিছু পুড়তে থাকে। আব্দুল বাকি নামে অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই বস্তিতে মুক্তিযোদ্ধা মুসলিম উদ্দিনের বসত-বাড়ির বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে লোকজন বলাবলি করছিল।  তিনি বলেন, ওই বস্তিতে মুক্তিযোদ্ধা মুসলিম উদ্দিন এবং তার ৮ সন্তানেরই ১০টি ঘর রয়েছে। বগুড়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সাজেদুর রহমান সাজু জানান, তারাও শুনেছেন যে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। তার অভিযোগ রেলওয়ের জায়গায় অবৈধভাবে নির্মিত বস্তি বাড়ি-ঘরে বিদ্যুতের বিভাগের পক্ষ থেকে অবৈধভাবে সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। 


বগুড়া ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারি পরিচালক খন্দকার আব্দুল জলিল জানান, তারা দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অগ্নিকাÐের খবর পান। এরপর সেখানে পানিবাহী চারটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। বগুড়া শহরের নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর তরিকুল ইসলাম জানান, ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন দ্রুত নেভানো সম্ভব হলেও ঘরে রাখা জিনিসপত্র রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।


ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা মুসলিম উদ্দিনের কন্যা সাহেরা বেগম জানান, আগুনে তার ঘরে রাখা নগদ দেড় লাখ টাকা পুড়ে গেছে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়ের বিয়ের জন্য টাকাগুলো ঘরে রেখেছিলাম। কিন্তু আগুনে সব শেষ হয়ে গেল।’


বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুসলিম উদ্দিনকে বসবাসের জন্য অনেক আগেই জেলার সারিয়াকান্দি উপাজেলায় ‘বীর নিবাস’ নামে একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি সেখানে না থেকে শহরের ওই বস্তিতে বসবাস করেন। জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধা মুসলিম উদ্দিনকে তার বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি-ঘর নেই এমন ৫জনকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি-ঘরে বসবাস করতে বলা হয়েছে।