বগুড়ায় স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেয়ে তরুণীর বিষপান

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সুমা খাতুন (২৩) নামে এক তরুণী স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেয়ে বিষপান করেছেন। রবিবার (১২ জানুয়ারি) এ ঘটনা ঘটে। তিনি বর্তমানে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সুমা খাতুন উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের বয়রা কান্দি গ্রামের শাজাহান মোল্লার মেয়ে। বিষপানের আগে তিনি স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলেন। এ বিষয়ে গত বুধবার সারিয়াকান্দি থানায় একটি অভিযোগও রয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্কে গত ২৮ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে সুমা খাতুনের বিয়ে হয় একই গ্রামের সাগর মিয়ার (২৫) সঙ্গে। গত ২৯ নভেম্বর ঢাকার বাইপাইল কাজি অফিসে তাদের বিবাহ রেজিস্ট্রি হয়। এরপর ঘর সংসার করাকালে গত ২০ ডিসেম্বর বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে সাগর মিয়া জোরপূর্বক কতিপয় দুষ্কৃতকারীর সাহায্যে সুমার কাছ থেকে তালাকনামায় স্বাক্ষর করায়। পরে সাগর মিয়া সুমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। নিরুপায় সুমা আক্তার ঢাকা ছেড়ে গত ৭ জানুয়ারি নিজের গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। পরে সুমা ৪ জনকে আসামি করে গত বুধবার সারিয়াকান্দি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর গতকাল রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে সুমা সাগরের গ্রামের বাড়িতে আমরণ অনশন করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন এবং তার পরিবারের নিকট থেকে বিদায় নেন। পরে পথিমধ্যে থেকে ফিরে এসে সুমা আত্মহত্যা করার উদ্দেশ্যে দুপুর ১২টার দিকে বিষপান করেন। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে সারিয়াকান্দি থানার হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সুমার বড়ভাই সুজন মিয়া বলেন, সাগর আমাদের অজান্তে আমার বোনকে বিয়ে করে, আবার সন্ত্রাসী ছেলেদের দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তালাকনামায় সই করে নিয়ে আমার বোনকে আর গ্রহণ করতে চাচ্ছে না। এমতাবস্থায় আমার বোন তার বাড়িতে আমরণ অনশন করার প্রস্তুতির পর বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। আমার বোনকে নিয়ে আমরা এখন বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত রয়েছি। বিষয়টির আমরা সঠিক বিচার চাই।

অভিযুক্ত সাগর মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, সুমার বিষ খাওয়ার বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। সুমাকে আমি আবারও গ্রহণ করতে চাই।

সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম বলেন, যেহেতু ঢাকায় ঘটনাটি ঘটেছে এবং ঢাকাতেই ছাড়াছাড়ি হয়েছে। তাই এ বিষয়ে তদন্ত করা খুবই মুশকিল। তবে মেয়ের নিরাপত্তার জন্য থানায় একটি অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিষ খাওয়ার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি এবং অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।