সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কাহালু প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইউনুছ আলী টনির মৃত্যু
কাহালু (বগুড়া) প্রতিনিধি
সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত কাহালু প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইউনুছ আলী টনি (৫৬) আর বেঁচে ফিরলেন না। মৃত্যুর সাথে দশদিনের লড়াই শেষে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
জানা গেছে, গত ৯ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে কাহালু উপজেলা প্রশাসন চত্বর এলাকা থেকে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন টনি। এসময় হঠাৎ করে একটি মোটরসাইকেল সামনে থেকে তাকে ধাক্কা দেয়। সড়কে পড়ে গিয়ে তিনি মাথায় মারাত্মক আঘাত পান। প্রথমে তাকে কাহালু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। প্রায় ১০ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি।
ইউনুছ আলী টনি ছিলেন কাহালু পৌর সদরের পাল্লাপাড়া গ্রামের মৃত আমির মুন্সীর ছেলে। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছিলেন সক্রিয়। কাহালু কলেজে পড়ার সময় ছাত্র ইউনিয়নের ব্যানারে প্রথমে জিএস, পরে ভিপি নির্বাচিত হন। এ সময়েই তিনি “শান্তি কোথায়” নামে একটি বই লেখেন, যা পাঠক মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি ছাত্রলীগে যোগ দেন এবং পরে কাহালু উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। রাজনীতির ধারাবাহিকতায় উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
রাজনীতির পাশাপাশি লেখালেখির প্রতিও তার ছিল বিশেষ টান। বগুড়ার স্থানীয় পত্রিকা 'চাঁদনী বাজার'-এ সাংবাদিকতা করার সময় তিনি কাহালু প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সাদাসিধে জীবনযাপনকারী এক নির্লোভ মানুষ। তার মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
শুক্রবার রাতেই তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে পাল্লাপাড়ার নিজ বাড়িতে ভিড় করেন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও সাধারণ মানুষ। এক নজর দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন অনেকেই।
ইউনুছ আলী টনির ছোট ভাই ইউছুব আলী, যিনি একজন কলেজ শিক্ষক, জানিয়েছেন—শনিবার (১৯ এপ্রিল) বাদ আসর কাহালু কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।