নওগাঁর তপোবন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভুয়া ভাউচারে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ
নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁ শহরের তপোবন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের উন্নয়নের টাকা গেছে শিক্ষকদের পকেটে। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এর আওতায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস স্কীমের আওতায় শিক্ষার মান্নোয়নের জন্য ৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে বরাদ্দের সিংহভাগই অর্থই পকেটে ঢুকিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বরাদ্ধকৃত অর্থের একটি অংশ শিক্ষক, অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য এবং নিরাপদ পানি, বিজ্ঞানাগার, পাঠাগার ও মেয়েদের কমন রুমের উন্নয়নে ব্যয় করার কথা উল্লেখ থাকলেও সঠিকভাবে সেই সব খাতে ব্যয় সম্পন্ন করা হয়নি
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এসব খাতে ভূয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে সিংহভাগ অর্থই আত্মসাৎ করেছেন। একটি ভাউচারে একটি মিক্সিং মেশিন ক্রয় বাবদ খরচ দেখিয়েছেন ৭৬হাজার টাকা। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩০হাজারেরও কম। ২টি বুক সেলফ বাবদ ৪০হাজার টাকা ও অপরদুটি ভাউচারে ৫৫ হাজার টাকার বই ক্রয় দেখালেও বাস্তবে ৫ হাজার টাকার বইও খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে ওই স্কুলেরই একজন জানিয়েছেন।
এদিকে অসহায় মেধাবী ১৫ জন শিক্ষার্থীদের জন্য ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্ধ থাকলেও ১২জন শিক্ষার্থীকে দেয়া হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। অপরদিকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সহায়তা ও উপকরন কেনা বাবদ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্ধ থাকলেও তার কোন হদিস মিলেনি।
স্থানীয় জুয়েল হোসেন, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল হাকিমসহ একাধিক অবিভাবকরা বলেন, বিদ্যালয়ে বরাদ্দগুলো দেওয়া হয়েছে উন্নয়ন এর জন্য। আর সেগুলো পকেটে ভরাচ্ছেন শিক্ষকরা। মাত্র ৫ লাখ টাকার মধ্যে যদি এমন করে তাহলে কেমন শিক্ষক তারা। যদি ঘটনা সত্য হয়ে থাকে তবে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, কখন বরাদ্দ আসলো আর নতুন কি মেরামত বা ক্রয় করলো আমাদের বিদ্যালয়ের উন্নয়ন এর জন্য আমরা সঠিক জানিনা। তবে যদি বরাদ্দ এসেও থাকে তাহলে হয়তো অল্প কিছু কাজ করেছে।
তপোবন বালিকা উচ্চ বিদালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিউর রহমান বলেন, বিগত কমিটির সময় বরাদ্ধ পেয়েছিলাম কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকল কাজ হয়েছে। তাতে কিছু ১৯-২০ হয়েছে এটা আমি স্বীকার করি। বিল ভাউচার গুলা সমন্বয় করা হয়েছে।
নওগাঁ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাঃ ওয়াসিউর রহমান বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখবো। যদি বরাদ্ধকৃত টাকার ব্যয়ের খাতে অসঙ্গতি পাই তবে অব্যশই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহাদৎ হোসেন বলেন, বরাদ্দকৃত টাকার অব্যশই স্বচ্ছতার সাথে শতভাগ কাজ করতে হবে। সেই সাথে উল্লেখিত কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেগুলোতে অনিয়ম করা হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে