বগুড়ায় চাঁদাবাজির অভিযোগে জনতার হাতে পুলিশ আটক
শাজাহানপুর( বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার শাজাহানপুরে মামলা ও গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে রুহুল আমিন (৩২) নামের এক পুলিশ কনস্টেবল জনতার হাতে আটক হয়েছে। সংবাদ পেয়ে সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার উপজেলার নিশ্চিন্তপুর শাহ্পাড়া এলাকায়।
আটক কনস্টেবল রুহুল আমিন আগে থেকেই বগুড়া পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত ছিলেন। তিনি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলাধীন কয়রা শরতলী গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে সন্ধ্যায় শাজাহানপুর থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চন্দনবাইশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত থাকা অবস্থায় রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে জুয়ার আসর থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ থাকায় বর্তমানে তাকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে ডিবি পরিচয়ে নিশ্চিন্তপুর শাহ্পাড়া গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল বাকি শাহকে (৬০) আটক করতে যায় কনস্টেবল রুহুল আমিন। কিন্তু তিনি বাড়িতে না থাকায় তার পরিবারের কাছ থেকে ৫শ’ টাকা নিয়ে চলে যায় রুহুল আমিন।
এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ফের আব্দুল বাকি শাহ্’র বাড়িতে হানা দেয় কনস্টেবল রুহুল আমিন। সেখানে গিয়ে আব্দুল বাকি শাহ্’র ছেলে সাজ্জাদ হোসেন সবুজকে (৩২) বলে, গোপন সংবাদে জানা গেছে তার বাড়ির কোনায় কিছু আছে। আপনাকে নিয়ে সেটা উদ্ধার করতে হবে। একপর্যায়ে সাজ্জাদ হোসেন সবুজকে তার বাড়ির দক্ষিণ পাশে কলাবাগানে নিয়ে গিয়ে একটি ছোট্ট টিনের কৌটা দেখতে পায় এবং কৌটাটি সবুজকে তুলতে বলে। এরপর ওই কৌটা খুলে পাঁচ রাউন্ড রাবার বুলেট দেখতে পায়। এসময় সবুজকে বলে, ৫ আগস্টের পরে অনেক থানায় মিসিং হওয়া বুলেট আপনার বাড়ির পিছনে পওয়া গেল।
এ ঘটনায় মামলা হবে এবং আপনাকে গ্রেফতার করা হবে। এমন ভয় দেখিয়ে সবুজের কাছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাবি করে কনস্টেবল রুহুল আমিন। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা রুহুল আমিনকে আটক করে গণধোলাই দেয়।
অপরদিকে সবুজের বড় বোন শাপলা খাতুন (৩৮) পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন এবং সেনাবাহিনীকে বিষয়টি অবগত করেন। সংবাদ পেয়ে সেনাসদস্য ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং বেলা ২টার দিকে কনস্টেবল রুহুল আমিনকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। এসময় রুহুল আমিনের হেফাজত থেকে পাঁচটি রাবার বুলেট ও তার ব্যাগে থাকা ১৫টি গুলি উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
শাজাহানপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, জনতার হাতে আটক ও গণধোলাইয়ে আহত অবস্থায় কনস্টেবল রুহুল আমিনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চাঁদা দাবির ঘটনায় ভিকটিম সাজ্জাদ হোসেন সবুজের বড় বোন শাপলা খাতুন বাদি হয়ে এজাহার দিয়েছেন বলেও তিনি জানান।