বগুড়ায় সারজিস আলমের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এনসিপি’র সমন্বয় সভাস্থল লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ, একটি বিস্ফোরিত

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৪১ ।
প্রধান খবর
পঠিত হয়েছে ৪৪ বার।

বগুড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র উত্তরাঞ্চীলয় মূখ্য সংগঠক সারজিস আলমের উপস্থিতিতে দলটির সমন্বয় সভা চলাকালে সভাস্থল স্থানীয় জিলা পরিষদ চত্বর লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। সোমবার বেল সাড়ের ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

 

নিক্ষেপ করা দু’টি ককটেলের মধ্যে একটি বিস্ফোরিত হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি এবং এনসিপি’র সভায়ও কোন বিঘ্ন সৃষ্টি হয়নি। পুলিশ অবিস্ফোরিত একটি ককটেল উদ্ধার করে সেটিকে নিস্ক্রিয় করার জন্য পানি ভর্তি বালতির ভেতরে রেখে দিয়েছে। 

 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এনসিপি’র সভাস্থলকে ঘিরে আগে থেকেই ব্যাপক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ কারণে কেউ সভাস্থলের ভেতরে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারনি।

 

 বগুড়া সদর থানার ওসি হাসান বাসির জানানা, জিলা পরিষদের বাইরে থেকে দু’টি হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে তাতে কেউ হতাহত হয়নি। তিনি বলেন, কে বা কারা এই হাতবোমা নিক্ষেপ করেছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

 

এর আগে দুপুর পৌণে ৩টার দিকে শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ সংলগ্ন এনসিপি’র অস্থায়ী কার্যালয় উদ্বোধনের প্রাক্কালে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন দলটির উত্তরাঞ্চীলয় মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

 

এ সময় সারজিস আলম বলেন, বিগত সময়ে বিএনপি যখনই সরকার গঠন করেছে, তা জোট সরকারের মাধ্যমেই করেছে। জামায়াতও কখনো শক্তিশালীভাবে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেনি। আমরা মনে করি, আগামীতে আ’লীগ ও আধিপত্যবাদ প্রশ্নে বিএনপি বা জামায়াত কেউ এককভাবে দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারবে না। এই জায়গায় এনসিপির রাজপথে ও সংসদে শক্তিশালী প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন। 

 

 

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এখন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। কমিশন যদি মনে করে তারা ইচ্ছেমতো নির্বাচন আয়োজন করবে, তবে তারা ভুল করছে। নির্বাচন কমিশন কারো দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে, আমাদের সঙ্গে স্বেচ্ছাচারিতা করছে। আমরা চাই কমিশন তার স্বাধীনতা বজায় রাখুক, মেরুদণ্ড সোজা রাখুক।

 

 

জামায়াতের আচরণ প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, 

পিআর ইস্যুতে জামায়াত আন্দোলন করলেও জুলাই সনদে সে বিষয়ে কোনো উল্লেখ ছিল না। অথচ তারা সেখানে স্বাক্ষর করেছে এটা দ্বিচারিতা এবং তাদের কাছ থেকে এটা প্রত্যাশিত ছিল না।

 

তিনি আরও বলেন, এই দেশের মানুষের সামনে নতুন করে কেউ স্বেচ্ছাচারিতা করবে তা হবে না। যদি জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি, বিচারিক প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হয় এবং নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করে তাহলে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

 

 

 

এনসিপি নেতা বলেন, আগামী প্রজন্ম যদি সংসদে প্রতিনিধিত্ব না করে, তাহলে রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন সম্ভব নয়। যারা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও খুনিদের বিচারের জন্য কাজ করবে, তাদের সঙ্গে এনসিপি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।

 

তিনি বলেন, আমাদের কাজ সংসদ বা নির্বাচনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জনগণের স্বার্থে কাজ করাই এনসিপির মূল লক্ষ্য।

 

জুলাই সনদ প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, সংস্কার ও বিচারের ধারাবাহিকতা রক্ষায় এনসিপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। অনেকে আইনগত নিশ্চয়তা ছাড়া জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেও, এনসিপি তাতে গা ভাসায়নি। যতক্ষণ পর্যন্ত আইনগত নিশ্চয়তা না পাওয়া যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এনসিপি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না।

 

তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তরুণদের দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে আবারও আন্দোলনে নামতে হবে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সংস্কার আনতে হবে। স্বাস্থ্য খাত দুর্নীতির তীর্থভূমিতে পরিণত হয়েছে। আমরা চাই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনীতিমুক্ত হোক।

 

সংগঠন শক্তিশালী করার উদ্যোগ প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে আমরা জেলা পর্যায়ে সমন্বয় সভা করছি। এ মাসের মধ্যেই উত্তরাঞ্চলের সব জেলায় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো ছাড়া সংসদে সরকারদল বা বিরোধী দল হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করা সম্ভব নয়।

 

এর আগে আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ সংলগ্ন স্থানে এনসিপির দলীয় অস্থায়ী কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন সারজিস আলম। এ সময় রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাকিব মাহদীসব কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।