বগুড়ায় চুরি হচ্ছে একের পর এক ট্রান্সফরমার, পাওয়া যাচ্ছে চোরের বিকাশ নম্বর

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৪১ ।
বগুড়ার খবর
পঠিত হয়েছে ১১ বার।

শিবগঞ্জে একের পর এক বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। সেচের কাজে ব্যাঘাত ঘটায় ফসল উৎপাদনে তৈরি হয়েছে মারাত্মক সংকট, কিন্তু প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় চোরচক্র হয়ে উঠছে আরও বেপরোয়া।

 

সর্বশেষ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাতে উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের শংকরপুর পশ্চিমপাড়া কৃষক হারুনুর রশিদের সেচঘরের একটি ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরি হয়। চুরির পর সেচঘরের মিটারের তারের সাথে চিরকুট ঝুলে রেখে যায় চোর।

 

 

কৃষক হারুনুর রশিদ জানান, চিরকুটে দেওয়া নাম্বারে ফোন দিলে আমার কাছে থেকে বিকাশে ৪০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা দিলে চুরি হওয়া জিনিস যেখান থেকে নিয়ে এসেছে ওখানেই রেখে আসবে। এই চুরির ভয়ে রাত জেগে আমাকে সেচ ঘর পাহারা দিতে হয়।

 

এর আগে গত বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে পিরব ইউনিয়নের জানগ্রামে কৃষক মো. সামছুল আলম ও মনছুর রহমানের সেচঘর থেকে তিনটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও মিটার খুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

 

ঘটনার পরদিন সকালে কৃষকেরা সেচঘরের পাশে একটি চিরকুট পান, যেখানে লেখা ছিল দুটি মোবাইল নম্বর। সেই নম্বরে যোগাযোগ করলে অপর প্রান্তের ব্যক্তি নিজেদের ‘ট্রান্সফরমারের মালিক’ দাবি করে এবং বিকাশে ৬০ হাজার টাকা দিলে ফেরত দেওয়া হবে বলে জানায়।

 

কৃষক সামছুল আলম জানান, তিনি পরদিনই থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এরপরও চোরচক্র ফোনে প্রথমে ২০ হাজার টাকা দাবি করে, পরে টাকা পাঠানোর পর আবারও অতিরিক্ত ২০ হাজার টাকা চায়।

 

কৃষকেরা জানান, থানায় অভিযোগের তিন দিন পার হলেও এখনো কোনো অভিযান বা তদন্ত দেখা যায়নি। এতে কৃষকরা পড়েছেন দিশেহারা অবস্থায়, আর চোরচক্র বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

 

শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। তদন্ত শুরু হয়েছে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

তবে এলাকাবাসীর দাবি- পুলিশের কার্যক্রম এখনো কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ, বাস্তবে চোর ধরার তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। ফলে একদিকে বিদ্যুৎহীন সেচের মাঠে শুকিয়ে যাচ্ছে ফসল, অন্যদিকে চোরচক্রের হুমকিতে ঘুম হারাম হচ্ছে সাধারণ কৃষকের।