কোরবানির হাট কাঁপাতে প্রস্তুত 'বগুড়ার ডন'
অরুপ রতন
প্রতি বছরের মতো এবারও কোরবানির হাটে চোখ ধাঁধানো গরুর দেখা মিলছে। তবে এবছর বগুড়ায় সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে এক বিশাল আকৃতির কালো রঙের গরু ‘বগুড়ার ডন’। শাহীওয়াল ক্রস জাতের এই গরুটি শুধু ওজনে বা আকারে বড় নয়, স্বভাবেও খুবই শান্ত ও নম্র। এর আকৃতি, স্বভাব ও পরিচর্যার ধরনে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা প্রতিদিন ছুটে আসছেন খামারে। ইতিমধ্যেই অনেকেই গরুটি কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বগুড়া সদরের এরুলিয়া ইউনিয়নের দোগাড়িয়া গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা রবিউল ইসলাম শিমুল তার খামারে দীর্ঘ দুই বছর ধরে সন্তানের মতো যত্নে লালন-পালন করেছেন গরুটিকে। ‘বগুড়ার ডন’ নামটিও দিয়েছেন তার ছোট ছেলে। বর্তমানে গরুটির ওজন প্রায় ১১’শ কেজি, যা প্রায় ১ টনেরও বেশি। গরুটি লম্বায়, প্রস্থে ও উচ্চতায় যে কারো দৃষ্টি কেড়ে নেবে। এই গরুটির দাম হেঁকেছেন ১৫ লাখ টাকা, তবে ১২ লাখ টাকায় রাজি আছেন বিক্রিতে। শিমুলের মতে, এটি হবে এবারের জেলার সবচেয়ে দামি ও আকর্ষণীয় গরু।
গরুটি বড় করার ক্ষেত্রে কোন ধরনের মোটাতাজাকরণ ওষুধ বা ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়নি। প্রাকৃতিক খাবার—খড়, ধানের গুড়া, ভুষি, ভাত ও পানি খাইয়েই বড় করা হয়েছে। প্রতিদিন গরুটির খাবারের পেছনে খরচ হচ্ছে ১২শ থেকে ১৪শ টাকা। শান্ত স্বভাবের কারণে গরুটিকে লালন-পালন করাও ছিল সহজ। এই কারণেই শিমুল জানিয়েছেন, তিনি গরুটিকে কখনও ব্যবসার পণ্য মনে করেননি, বরং সন্তানের মতোই আদরে বড় করেছেন।
রবিউল ইসলাম শিমুলের খামারে এখন রয়েছে আরও ১৪টি দেশি ও শাহীওয়াল জাতের বড় গরু। সেগুলোর প্রতিটির জন্যই রয়েছে আলাদা যত্ন ও পরিচর্যা। তবে ‘বগুড়ার ডন’ যেন আলাদা এক অনুভব। যারা গরু দেখতে আসছেন, সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এই কালো রঙের বিশাল দেহী গরুটি।
খামারী শিমুল বলেন, “আমি দুই বছর আগে রাজশাহী থেকে আড়াই লাখ টাকায় গরুটিকে কিনেছি। তখন থেকেই ভাবছিলাম, এটিকে প্রাকৃতিক খাবারে বড় করব, যাতে মানুষের মধ্যে এক ধরনের আস্থা তৈরি হয়। এখন এই গরু দেখে সবাই মুগ্ধ। অনেকেই হাটে না গিয়ে খামার থেকেই গরুটি নিতে চাইছেন।”
তিনি আরও জানান, কোরবানির সময় ঘনিয়ে আসায় দামদাতার সংখ্যা বাড়ছে। যেকোনো সময় বিক্রি হয়ে যেতে পারে ‘বগুড়ার ডন’। এছাড়া তার খামারের অন্যান্য গরুগুলোও এবার বিক্রির জন্য প্রস্তুত এবং প্রত্যাশা করছেন ভালো দাম।