বগুড়ায় জন্মের সাতদিনেই বাবা ফেলে গিয়েছিলেন, তাকেই একবার দেখতে চায় মিরাজুল

অরুপ রতন
প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫ ১৬:১৭ ।
বিশেষ
পঠিত হয়েছে ৫৯ বার।

জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী মিরাজুল ইসলাম (২২)। জন্মের মাত্র সাত দিনের মাথায় জন্মদাতা বাবা ইব্রাহীম মিয়া তাদের ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর আর কখনো বাবার মুখ দেখেনি সে। আজও জানে না, কোথায় আছেন তার বাবা, বেঁচে আছেন কিনা—সেই তথ্যও অজানা। তবু একটিই চাওয়া—এই জীবনে একবারের জন্য হলেও বাবার মুখ দেখতে চায় সে।

২০০২ সালে ঢাকায় কাজ করতে গিয়ে পরিচয় হয় বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাবলু মুন্সীর মেয়ে নাজমা বেগমের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা জেলার চানপুর সদর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে ইব্রাহীম মিয়ার। সেই পরিচয় থেকে বিয়ে। তবে সম্পর্কটি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।

নাজমা বেগম বলেন, “ইব্রাহীম আমাকে সন্তান নিতে মানা করেছিল। বলেছিল, তার ভাইবোনদেরই লালন-পালন করতে। কিন্তু দুর্ঘটনাবশত আমি গর্ভবতী হয়ে যাই। তখন সে সন্তান নষ্ট করতে বলেছিল। আমি রাজি হইনি। এরপর থেকেই আমাদের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।”

২০০৩ সালের শুরুর দিকে জন্ম নেয় মিরাজুল। কিন্তু সন্তানের বয়স যখন মাত্র ৭ দিন, তখন ইব্রাহীম মিয়া পালিয়ে যায়। আর কখনো ফিরে আসেনি।

মিরাজুলের বয়স যখন ৫ বছর, তখন তার মা নাজমা বেগম অন্যত্র বিয়ে করেন। এখন তিনি সেখানে আরও দুটি সন্তানের মা। আর মিরাজুল বেড়ে ওঠে তার নানাবাড়িতে। তাকে মানুষ করেছেন তার নানা-নানী।

নানী রহিমা বেওয়া বলেন, “আমার স্বামী মিরাজুলকে আদর-যত্নে বড় করেছেন। কিন্তু তিনি ৮ বছর আগে মারা যান। মিরাজুল শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার ডান হাত ও পা বিকলাঙ্গ। সেই সঙ্গে মৃগী রোগেও ভুগছে সে। এখন শুধু একটাই ইচ্ছা—বেঁচে থাকতে একবার বাবাকে দেখতে চায়।”

মিরাজুল বলেন, “আমি জানি না আমার বাবা কোথায়। শুধু একবার তার মুখ দেখতে চাই। যদি গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমার কথা তার কানে পৌঁছে যায়, আর তিনি যদি একবার এসে আমার সঙ্গে দেখা করেন—তাহলে আমার এই জীবনটা সার্থক হয়ে যাবে।”