বাড়ি নয়, ছিল সড়কের খাদে: শেষমেশ পাশে দাঁড়ালো বগুড়া ছাত্রদল
স্টাফ রিপোর্টার
চার মাস ধরে সড়কের পাশে পড়ে ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক বৃদ্ধ। খোলা আকাশ, খাবারের অনিশ্চয়তা আর মানবিক অবহেলার মধ্যেই কেটেছে তার দিনগুলো। শেষ পর্যন্ত সেই বৃদ্ধের দায়িত্ব নিয়েছে বগুড়া জেলা ছাত্রদল।
সোমবার (২১এপ্রিল) বিকেলে নন্দীগ্রাম উপজেলার বিজরুল বাজার সংলগ্ন কল্যাগাড়ী এলাকা থেকে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করেন জেলা ছাত্রদল সভাপতি হাবিবুর রশিদ সন্ধান। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে গোসল করিয়ে নতুন পোশাক পরিয়ে ভর্তি করা হয় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ছয় মাস আগে ওই বৃদ্ধকে প্রথম দেখা যায় বিজরুল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায়। পরে জানুয়ারি মাসে তিনি চলে আসেন আঞ্চলিক সড়কের পাশে খাদে। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তার পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
উদ্ধারের সময় অস্পষ্ট ভাষায় তিনি নিজের নাম বলেন ‘বেলাল’ এবং মেয়ের নাম ‘গোলাপি’। তবে নির্দিষ্ট ঠিকানা জানাতে পারেননি।
এলাকার বাসিন্দা ও সংরক্ষিত ইউপি সদস্য বেবী নাজনীন জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর হাইওয়ে পুলিশ তাকে হাসপাতালে নেয়। চিকিৎসা শেষে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এরপর দীর্ঘদিন ধরে তাকে দেখভাল করেছেন স্থানীয়রাই। কখনো খাবার, কখনো বাঁশের খুঁটি দিয়ে মশারির ব্যবস্থা করেছেন। ঈদের দিনটিও কেটেছে তার সেই খাদেই, পরিবারহীন অবস্থায়।
ঘটনার বিষয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম দয়া বলেন, “চার মাস ধরে ওই ব্যক্তি যেভাবে অবহেলায় ছিলেন, তা সমাজের জন্য লজ্জাজনক। বিষয়টি ছাত্রদল সভাপতিকে জানানোর পরই তিনি দায়িত্ব নেন।”
বগুড়া জেলা ছাত্রদল সভাপতি হাবিবুর রশিদ সন্ধান জানান, “মানবিক দিক বিবেচনায় আমরা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দিচ্ছি। শারীরিক ও মানসিকভাবে কিছুটা সুস্থ হলে তাকে বৃদ্ধাশ্রমে নেওয়ার চিন্তা করছি। যদি তার পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায়, তবে অবশ্যই তাদের কাছেই ফিরিয়ে দেওয়া হবে।”
ছাত্রদলের এমন মানবিক উদ্যোগ স্থানীয়ভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। রাজনীতির বাইরে এই দায়িত্বশীল অবস্থান সমাজে একটি ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে বলে মত দেন অনেকেই।