বগুড়ার শেরপুরে পানির চাপে ভেঙে গেল কাটাখালী বাঁধ

শেরপুর( বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫ ১০:২৫ ।
বগুড়ার খবর
পঠিত হয়েছে ৪৪ বার।

বগুড়ার শেরপুরে পানির চাপে ধসে গেছে সুঘাট ইউনিয়নের চককল্যাণী গ্রামের কাটাখালী বাঁধ। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যায় বাঁধটি ভেঙে গেলে বিলের পানি প্রবল স্রোতে বাঙালি নদীতে প্রবাহিত হতে থাকে। এতে ওই অঞ্চলে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাটির তৈরি বাঁধটির ভেতর দিয়ে ৬টি সরু পাইপলাইনের মাধ্যমে কয়েকটি গ্রামের ও বিলের পানি নিঃসরণ হতো। গত বছর বর্ষায় অতিরিক্ত চাপে বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে এলাকাবাসী সংস্কারের দাবি জানায়। এবার পুরোপুরি ধসে পড়ায় নতুন করে বিপদের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে এলাকায়।

 

বাঁধ ভাঙার ফলে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে বাধেঁর উপর অবস্থিত আবুল কাশেমের একটি দোকানঘর, গাছগাছালি এবং কয়েকটি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যোগাযোগের অবলম্বন স্থানীয় সড়ক। পানি বর্তমানে নদীর দিকে গেলেও বন্যায় পানি বাড়লে এই ভাঙা অংশ দিয়ে উল্টো স্রোতে পানি ঢুকে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।

 

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মধ্যে রয়েছে চক কল্যাণী, বিলজয়সাগর, জয়লা বটতলা, জয়নগর, গুয়াগাছী, চকধুলি, জালশুকা ও টেংরাখালীসহ ধুনট উপজেলার বেশ কিছু এলাকা। ঝুঁকিতে রয়েছে বিলজয়সাগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জয়লা বটতলা হাফিজিয়া মাদ্রাসা, চককল্যানী-চকধলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।

 

স্থানীয় প্রবীণ আব্দুল জলিল বলেন, বহু বছর এই বাঁধ আমাদের ফসল আর ঘরবাড়ি রক্ষা করেছে। এখন সেটা ধসে গেল, এই নিয়ে আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় আছি।

 

স্থানীয় কৃষক তারিকুল ইসলাম বলেন, আমার প্রায় ৫ বিঘা জমির ধান পানিতে তলিয়ে যেতে পারে। গত বছর বাধঁটি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ফসলের চাষ হুমকিতে ছিল। এখন যদি নদীর পানি বাড়ে, তাহলে আবাদি জমির পাশাপাশি ঘরবাড়িও থাকবে না।

 

স্থানীয় গৃহবধূ হাজেরা খাতুন বলেন, আমার ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না। রাস্তা ভেঙে গেছে। আর যদি পানি ঢোকে, আমরা কোথায় যাবো?

 

এলাকাবাসী অবিলম্বে বাঁধ পুনর্নির্মাণ ও একটি সুইচ গেট স্থাপনের দাবি জানান। তারা জানান, নিজেরা বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করলেও প্রয়োজনীয় সহায়তা না থাকায় কাজের অগ্রগতি হচ্ছে না।

 

সুঘাট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নূরনবী হিটলার বলেন, বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর আমরা উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি। জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।

 

এবিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান জানান, ইতোমধ্যেই উপজেলা প্রকল্প উন্নয়ন কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। দ্রুতই পরিকল্পনা অনুসারে বাধঁ রক্ষায় কাজ শুরু করা হবে।