নওগাঁয় ২ সাংবাদিককে নির্যাতন, উল্টো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:৫২ ।
প্রতিবেশী জেলা
পঠিত হয়েছে ১৩ বার।

নওগাঁর পত্নীতলায় একটি  বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকের অনিয়ম দুর্নীতি ও ভুল চিকিৎসা খবর প্রকাশ করায় মাহমুদুন্নবী ও রবিউল ইসলাম নামে স্থানীয় দুই সাংবাদিককে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে মালিকের বিরুদ্ধে। শুধু নির্যাতন করেই ক্ষান্ত হননি ক্লিনিক মালিকসহ তাদের দোসরা। উল্টো সাংবাদিক মাহমুদুন নবীর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দিয়েছে ক্লিনিক মালিক সমিতি। অথচ নির্যাতনের শিকার মাহমুদুন নবীর পরিবারের অভিযোগ আমলে নেয়নি পুলিশ। পুলিশের এমন তৎপরতায়  ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা। 

জানা গেছে, পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর সিটি ক্লিনিকে অতি সম্প্রতি দুই সাংবাদিককে নির্যাতন করা হয়। এক প্রসূতির সিজার অপারেশন করেন মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার দেওয়ান সবুর হোসেন। কিন্তু ভূল অপারেশনের অভিযোগ উঠে প্রসূতির পরিবারের পক্ষ থেকে। এ নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন ও আঞ্চলিক দৈনিক জয়পুরহাট খবর পত্রিকার প্রতিনিধি মাহমুদুন নবী সংবাদ প্রকাশ করেন।  

 

এছাড়া স্থানীয় ক্লিনিক ডায়াগনোষ্টিকে অব্যবস্থাপনা, অপ চিকিৎসা ও চিকিৎসকের অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন মাহমুদুন নবী ও দৈনিক মানবকন্ঠ পত্রিকার প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম নামে অপর এক সাংবাদিক। 

 

অনিয়মের এসব সংবাদ প্রকাশের জেরে গত ৭ সেপ্টেম্বর মাহমুদুন নবী ও রবিউলকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যযাতন চালায় ডাক্তার দেওয়ান সবুর হোসেনসহ ক্লিনিক ডায়াগনোষ্টিকের ভাড়াটে বাহিনী। সিটি ক্লিনিকের ভেতরে আটকে রেখে মারপিট করে তাদের উপড় অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। এক পর্যযায়ে মাহমুদুন নবীর গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারন করে নির্যাতনকারীরা। পরে তা ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিকরা দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন। কিন্তু সেই অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় নিরাপত্তা দিয়ে সাংবাদিকদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।

 

ঘটনার পর থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন মাহমুদুন নবী। লোক লজ্জায় তারা কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। 

 

এদিকে, নির্যাতনের ঘটনায় বাদি হয়ে ৯ সেপ্টেম্বর মাহমুদুন নবীর ভাই নূরুন নবী পত্নীতলায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ সেই মামলা গ্রহণ করেনি। বিপরীতে ক্লিনিক ডায়াগনোষ্টিক মালিকরা পুলিশের সাথে যোগসাজস করে ঘটনার ৩ দিন পর ১০ সেপ্টেম্বর  রাতে চাঁদাবাজির একটি সাজানো মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় পত্নীতলা উপজেলার বেশ কিছু ক্লিনিক ও ডায়াগনোষ্টিক থেকে কয়েক লাখ টাকার চাঁদা নেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে মাহমুদুন নবীর বিরুদ্ধে। এসব ঘটনার পর স্থানীয় সাংবাদিক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 

 

ন্যায় বিচারের প্রার্থনায় আদালতে মামলা করবেন জানিয়ে নির্যাতনের শিকার মাহমুদুন নবী বলেন, ক্লিনিক ডায়াগনোষ্টিক সমিতির নেতারা প্রবাবশালী। রাজনৈতিক সুযোগ সন্ধানী। তাই তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। ঘটনা মিমাংসা করার জন্য চাপ দিচ্ছে।  

ভূক্তভোগি রবিউল ইসলাম জানান, থানা পুলিশ রহস্বজনক তারনে  ক্লিনিক মালিকদের মামলা গ্রহন করে বৈষম্য বিরোধি ছাত্রদের নাম ভাংগিয়ে দোহায় দিচ্ছে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পত্নীতলা থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ক্লিনিক ডায়াগনষ্টিক সমিতির লোকজন বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের সাথে নিয়ে থানায় এজাহার দিতে এসেছিলেন। তাই তাদের অভিযোগ এজাহারভূক্ত করা হয়েছে। যথাযথ ভাবে অভিযোগ করলে মাহমুদুন নবীর অভিযোগ আমলে নেয়া হবে।