৬ বছরেও চালু হয়নি বগুড়ার বার্ন ইউনিট, কোটি টাকার প্রকল্প অচল
অরুপ রতন
প্রায় ৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের ৮ শয্যার বার্ন ইউনিট চালুর আগেই কার্যকারিতা হারিয়েছে। প্রয়োজনীয় জনবল ও চিকিৎসা সরঞ্জাম না থাকায় নির্মাণ শেষ হওয়ার ছয় বছর পেরোলেও ইউনিটটি অব্যবহৃত পড়ে আছে।
অভিযোগ রয়েছে, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে উত্তরাঞ্চলের কেন্দ্রস্থল বগুড়ায় বড় অগ্নিকাণ্ড বা দুর্ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ রোগীদের ঢাকাসহ দূরের হাসপাতালে পাঠাতে হয়। এতে সময় নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে রোগী বাঁচানো সম্ভব হয় না।
২০১৮ সালে বার্ন ইউনিট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০১৯ সালের মার্চে নির্মাণ শেষ হয় এবং ২০২০ সালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অবহেলায় আজও এটি চালু হয়নি। দামি বেড, সেন্ট্রাল এসি ও অন্যান্য আধুনিক যন্ত্রপাতি বছরের পর বছর ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হওয়ার পথে।
তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ টি এম নুরুজ্জামান বার্ন ইউনিট চালুর জন্য বহুবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিত আবেদন করেছিল। প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জামের বিস্তারিত চাহিদাপত্র পাঠিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
চাহিদাপত্রে একজন সিনিয়র কনসালটেন্ট, দুইজন জুনিয়র কনসালটেন্ট, চারজন সহকারী রেজিস্ট্রার, চারজন মেডিকেল অফিসার, দুইজন অ্যানেসথেসিওলজিস্ট, ১৬ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স, ১৬ জন অফিস সহায়ক, ১২ জন ওয়ার্ড বয় ও ৮ জন পরিচ্ছন্নকর্মীসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের তালিকা দেওয়া হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আজও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক ডা. মজিদুল ইসলাম বলেন, বার্ন ইউনিট চালুর জন্য যেসকল লোকবল দরকার তা নেই। তাই এটি চালু করা এখনও যায়নি। এই ইউনিটটি করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে৷ তবে ভবিষ্যতে বার্ন ইউনিট প্রয়োজন হলে এটি চালুর জন্য প্রস্তুত রাখা হবে।
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. ওয়াদুদ জানান, 'আমাদের হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট নেই। গুরুতর পোড়া রোগীদের আপাতত দুটি কক্ষে রাখা হয়। বগুড়ায় কার্যকর বার্ন ইউনিট না থাকায় রোগীদের ঢাকাসহ দূরের হাসপাতালে পাঠাতে হয়, যা রোগীর জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।'