বগুড়ায় অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটে রফিকুল-রেহেনা অসুস্থ দম্পতির

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৫ ১৯:১৭ ।
বগুড়ার খবর
পঠিত হয়েছে ৪৮ বার।

নিজেদের নেই কোন সন্তান। বাস করেন টিনের বেড়ার একটি খুপরি ঘরে। সেই ঘরে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন অসুস্থ স্বামী-স্ত্রী। চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য নেই তাঁদের। অর্ধাহার-অনাহারে কাটছে দিন। বেঁচে থাকাই যেন দুর্বিষহ রফিকুল-রেহেনা দম্পতির। তাদের বাড়ি বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের গুন্দইল গ্রামে।

সম্প্রতি রফিকুল-রেহেনা দম্পতির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এ করুণ দৃশ্য। রফিকুল ইসলাম (৪৫) ও রেহেনা খাতুন (৪৫) দম্পতির নিজের বলতে আছে ২ শতক জায়গার উপর একটি খুপরি টিনের বেড়ার ঘর। রফিকুল ইসলাম কাঠ মিস্ত্রীর কাজ করতেন। সেই টাকায় সংসার চালাতেন তারা। রেহেনা খাতুন অনেক আগে থেকেই অসুস্থ। চলাফেরা করতে পারে না। দুই বছর আগে রফিকুল ইসলামের হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে হাত-পা অসাড় হয়ে যায়। এরপর থেকে মানুষের কাছে হাত পেতে যা পায় তা দিয়ে চলতো সংসার। এখন অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় ঘর থেকে বেড় হতে পারছেন না এই দম্পতি। অন্যের দয়া কোন দিন খাওয়া জুটছে আবার কোন দিন না খেয়ে কেটে যায় দিন। টাকার অভাবে করাতে পারছেন না চিকিৎসা।

রফিকুল ইসলাম বলেন, যখন আমি ভালো ছিলাম তখন কাজ করেছি স্ত্রীর চিকিৎসা করিয়েও সংসার চালাতে পারতাম। আমি প্রায় দুই বছর হলো বিছানায় পরে আছি। আমাদের কোন দিন পেটে ভাত যায় আবার কোন দিন না খেয়ে থাকতে হয়। চিকিৎসা কিভাবে করাবো? সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা আমরা পাই না। প্রতিবেশীরা আর কয় দিন দেখবে? আল্লাহ আমাদের কোন সন্তান দেয়নি। আগামী দিনগুলো কিভাবে যাবে তা জানি না।

রফিকুল ইসলামের প্রতিবেশী নন্দীগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক সবুজ কুমার সরকার বলেন, রফিকুলের বাড়ির উপর দিয়ে আমি চলাচল করি। ওই দুই জনের কষ্ট দেখলে খুব খারাপ লাগে। আমি চেষ্টা করি তাদের সাহায্য করার। তাদের চিকিৎসা ও খাওয়া-দাওয়ার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে তাদের জন্য ভালো হয়।

নন্দীগ্রাম পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, আমি তাদের বিষয়ে শুনেছি। আমি রফিকুল ইসলামের বাড়িতে যাবো। পৌরসভার পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।