বগুড়ায় আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস পালন

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:২৭ ।
বগুড়ার খবর
পঠিত হয়েছে ২৫ বার।

বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস পালন করেছে শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ’ (তীর)। সোমবার দুপুরে দিবসটি উপলক্ষে বন বিভাগ ও বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন যৌথভাবে শকুন সংরক্ষণে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করে।

 

বাংলাদেশে ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রোফেন নামক ওষুধ ব্যবহারের কারণে শকুন বিলুপ্তির মুখে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মৃত পশুর মাংস শকুনের জন্য ক্ষতিকর নয়; তবে ডাইক্লোফেনাকযুক্ত পশুর মাংস খেলে কিডনি নষ্ট হয়ে ২-৩ দিনের মধ্যে শকুন মারা যায়। এ কারণে গত তিন দশকে উপমহাদেশে প্রায় ৭৫ শতাংশ শকুন মারা গেছে। ১৯৮০-এর দশকে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে প্রায় চার কোটি শকুন ছিল, অথচ বর্তমানে সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪০ হাজারে।

 

২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ অব ভেটেরিনারি মেডিসিন-এর গবেষক ড. লিন্ডসে ওক প্রমাণ করেন, পশুচিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ব্যবহারের কারণেই শকুন হুমকির মুখে পড়ে। ভারতে প্রতি বছর প্রায় ৩০ শতাংশ শকুনের মৃত্যু ঘটে এই ওষুধের কারণে। এ অবস্থায় পৃথিবীর অনেক দেশেই শকুন-বান্ধব বিকল্প ওষুধ ‘মেলোক্সিক্যাম’ ব্যবহার শুরু হয়েছে।

 

অনুষ্ঠানে তীরের উপদেষ্টা মো. শাহজাহান আলী বলেন, “শকুনকে প্রকৃতির ঝাড়ুদার বলা হয়। এ পাখি রোগাক্রান্ত মৃত প্রাণী খেয়ে অ্যানথ্রাক্স, যক্ষ্মা, ক্ষুরারোগসহ নানা সংক্রমণ থেকে জীবকুলকে রক্ষা করে।”

 

তীরের সভাপতি আশা মনি বলেন, “বন বিভাগের তথ্যানুযায়ী স্বাধীনতার আগে বাংলাদেশে প্রায় ৫০ হাজার শকুন ছিল। আইইউসিএন ও বন বিভাগের যৌথ শুমারি অনুযায়ী ২০২৩ সালে দেশে মাত্র ২৬৭টি শকুনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।”

 

উল্লেখ্য, ২০১১ সাল থেকে পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ করছে তীর। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অবদানের জন্য সংগঠনটি ২০২১ সালে জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়।