আমাকে ও আমার সংগঠনকে বিতর্কিত করতে চক্রান্ত করা হয়েছে: ভিপি নুর

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৩:৪৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৭১ বার।

নিজের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, আমাকে ও আমার সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদকে বিতর্কিত করতে 'রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়' এ হীন চক্রান্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তার সম্পর্কে 'ভুল' সংবাদ পরিবেশন করায় তিনি তিনটি গণমাধ্যমকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। খবর সমকাল অনলাইন 

গত মঙ্গলবার থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নুরুল হক নুরের সঙ্গে মোবাইলে দু'জন ব্যক্তির কথোপকথনের অডিও প্রচারিত হয়। ওই অডিওর ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশিত হয়, ভিপি নুর আর্থিক দুর্নীতি করেছেন। এরপর তার পদত্যাগের দাবি করে বুধবার ডাকসু ভবনে তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীরা। পরে সেই তালা খোলা হয়। এর আগে ভিপি নুরের পদত্যাগ ও তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ডাকসু ভবনের সামনে মানববন্ধন ও তার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

এ বিষয়ে নিজের বক্তব্য জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন নুর। এতে তিনি আরও বলেন, বেসরকারি দু'টি টেলিভিশন চ্যানেলে আমার কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপের খণ্ডিতাংশ বিকৃতভাবে প্রচার করে তা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এর ফলে আমার সম্মানহানি ও জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

নুর বলেন, অডিওটির প্রথম অংশের কথোপকথন ছিল আমার পরিচিত এক ভাইয়ের সঙ্গে। যেখানে আমার খালার কনস্ট্রাকশন ফার্মের ১৩ কোটি টাকার একটি কাজের ব্যাংক গ্যারান্টি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। এটা একান্ত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়। কিন্তু দু'টি টেলিভিশন চ্যানেল বিষয়টি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে। বলা হয় যে, আমি প্রকল্প কর্মকর্তার সঙ্গে ১৩ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ নিয়ে তদবির করছি। একইভাবে একটি অনলাইনেও এই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, আমি কোনো প্রকল্প কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলিনি কিংবা কোনো তদবির করিনি।

তিনি আরও বলেন, অডিও ক্লিপটির দ্বিতীয় অংশে অন্য ব্যক্তির সঙ্গে আমার কথোপকথন প্রচারিত হয়। এ নিয়ে দুটি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, আমি প্রবাসী কোনো এক ব্যক্তির কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছি। আরেকটি চ্যানেল প্রচার করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এক বিএনপি নেতার কাছে আমি আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছি। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা হলো, জনৈক প্রবাসী ফোন করে আমাকে সহযোগিতার প্রস্তাব দেন। কিন্তু আমি বিষয়টি নাকচ করে দিই। পুরো ফোনালাপটি শুনলে এ কথার সত্যতা পাওয়া যাবে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে নুর বলেন, আশ্চর্যের বিষয়, ওই ঘটনা নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করার ক্ষেত্রে আমার কোনো বক্তব্য নেওয়া হয়নি। আমাকে হেয়প্রতিপণ্ণ করা এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করে তা গণমাধ্যমে প্রচার সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় আইনবিরোধী কাজ। তাছাড়া তথ্য বিকৃত করে সংবাদ পরিবেশন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী অপরাধ। তাই ভুল সংবাদ পরিবেশন করায় ওই তিন সংবাদমাধ্যম কর্তৃপক্ষকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার এবং দায়িত্বশীল গণমাধ্যম হিসেবে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ করার আহ্বান জানাই। অন্যথায় আমি ওই তিন সংবাদমাধ্যম বর্জন করাসহ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।

সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান, ফারুক হাসানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।