আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে

১০ দফা দাবিতে বগুড়ায় সনাকের মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:৩১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩২৪ বার।

‘সরকারি চাকরি আইন ২০১৮’ এর বিতর্কিত ধারাসমূহ বাতিল ও ‘সুরক্ষা প্রদান আইন ২০১১’ বাস্তবায়নসহ টিআইবি’র (ট্রান্সপরেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ) প্রস্তাবিত ১০ দফা দাবিতে মাববন্ধন করেছে সনাক (সচেতন নাগরিক কমিটি)। রোববার বিকাল ৩ টায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে শহরের জিরোপয়েন্ট সাতমাথায় ওই মানববন্ধন করা হয়। 

দাবিগুলো হলো-  চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের বাস্তব সুফল নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ‘কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না এই অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে, অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই অভীষ্ট অর্জনে সকল অভীষ্টের কার্যকর বাস্তবায়নের পূর্বশর্ত হিসেবে অভীষ্ট ১৬ এর ওপর সর্বাধিক প্রাধান্য নিশ্চিত করতে হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণসহ গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সংগঠনসমূহ যাতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে পারে তার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, সকল নাগরিকের বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ ও ‘ফরেন ডোনেশনস (ভলান্টারি অ্যাক্টিভিটিস) রেগুলেশন অ্যাক্ট’ এর নিবর্তনমূলক ধারাসমূহ বাতিল করতে হবে, সরকারি খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে ‘সরকারি চাকরি আইন ২০১৮’ এর বিতর্কিত ধারাসমূহ বাতিল করতে হবে, ঋণ খেলাপিতে জর্জরিত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি ও জালিয়াতি এবং বেসরকারি ব্যাংকের নজিরবিহীন আর্থিক কেলেঙ্কারির সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় পেশাদারি উৎকর্ষ ও কার্যকরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সমন্বিত ও পরিপূরক কৌশল গ্রহণ করতে হবে এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান ও সদস্যদের নিয়োগে যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণ এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর কার্যকর প্রয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) আইন ২০১১’ বাস্তবায়নের জন্য একটি সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদককে শক্তিশালী করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছার কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করে প্রতিষ্ঠানটির ওপর সকল প্রকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সরকারি ও রাজনৈতিক প্রভাব বন্ধ করতে হবে।

রোববার দুপুরে ওই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, সনাক এর সভাপতি মাছুদার রহমান হেলাল, সহ সভাপতি প্রফেসর ওসমান গণি, প্রফেসর সায়মা, কানিজ, সাবেক সভাপতি ও বগুড়ার বিশিষ্ট লেখক বজলুল করিম বাহার, সনাক, স্বজন, ইয়েস ও ইয়েস ফ্রেন্ডস সদস্যরা। 

মানববন্ধনে সনাক সভাপতি মাছুদার রহমান হেলাল তাঁর বক্তব্যে বলনে, ‘কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না’ মর্মে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বাস্তবেই কাউকে ছাড় না দিয়ে, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে যেকোনো পর্যায়ের অবস্থান ও পরিচয়ে প্রভাবান্বিত না হয়ে, সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এ ধরণের অনিয়মে জড়িত সকলকে জবাবদিহিতা ও আইনের আওতায় এনে, দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান। পাশাপাশি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর পেশাগত শুদ্ধাচার, নিরপেক্ষতা ও উৎকর্ষ নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে ঢেলে সাজানোর এবং সেই সাথে স্থানীয় পর্যায়ে দুর্নীতিবিরোধী এ শুদ্ধি অভিযান জোড়ালো ভাবে চালাতে হবে।'

এসময় সাবেক সভাপতি বগুড়ার বিশিষ্ট লেখক বজলুল করিম বাহার তাঁর বক্তবে বলেন, দুর্নীতির ব্যাপকতা এমন পর্যায় পৌঁছেছে যে সবকিছু সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে চলে গেছে। স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্ষমতার ব্যাপক অপব্যবহার ও অনিয়ম রয়েছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে প্রতিটি সেবাদানকারি অফিসে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালুসহ প্রত্যেকটি দপ্তরে সকল কাজ সংবিধান অনুযায়ি নিজস্বগতিতে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন যাতে হয় সে বিষয়ে স্থানীয় প্রসাশনকে আরো সক্রিয় হবার আহ্বান জানান তিনি।