বসতভিটা নিয়ে বিরোধে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন, গ্রেফতার ৫

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:৩৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯৪ বার।

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সাতানী শ্রীবরদী এলাকায় বসতভিটা নিয়ে বিরোধের জের ধরে বড়ভাই মানিক গাজী পরিবারের লোকজন নিয়ে ছোট ভাই খোকন গাজীকে (৫০) খুন করেছে। খোকন ওই গ্রামের মৃত আ. আওয়াল গাজীর ছেলে। তিনি কাপড় ব্যবসায়ী ছিলেন। এ ঘটনায় সোমবার ভোরে পুলিশ মানিক গাজীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। খবর সমকাল অনলাইন

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাতানী শ্রীবরদী এলাকার দুই ভাই মানিক গাজী ও খোকন গাজীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বসতভিটার ১৭ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। দুই ভাইয়ের মালিকানাধীন ওই জমির নিজের অংশে ৫টি রুম নির্মাণ করে ভাড়া দেন ছোটভাই খোকন গাজী। কিন্তু মানিক গাজী রুমগুলোর ভাড়াটিয়াকে বের করে দিয়ে ওই জমি দখলে নেন। খোকন মিয়া ওই জমি জামানত রেখে বকশীগঞ্জ ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণের চাপে তিনি জমির তার অংশ বিক্রির চেষ্টা করলে তাতে বাঁধা দেন মানিক। কিছুদিন আগে এটা নিয়ে খোকন গাজী শ্রীবরদী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা কয়েক দফা বৈঠক করেন। এরপর থানার ওসি ও স্থানীয় গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকতার্রা দু’পক্ষকে নিয়ে বসে জমির দাম ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করেন এব১ এই টাকা মানিক গাজী তার ভাই খোকন গাজীকে দেবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। বিরোধ নিষ্পত্তি সভায় মানিক গাজী সবকিছু মেন নেন। কিন্তু বাড়িতে আসার পর মানিক গাজী তার সাব-ইন্সপেক্টর মেয়ে ও পরিবারের লোকজনের প্ররোচনায় ওই আপোষরফা না মানার ঘোষণা দেন। এর কিছুদিন পর মানিক গাজী প্রথমে ৪৫ ও পরে ৪০ লাখ টাকা দিতে চাইলে সেটাও মেনে নেন খোকন। কিন্তু সেই শর্ত ভঙ্গ করলে গত রোববার সকালে খোকন গাজী তার পরিবারের লোকজন নিয়ে ওই বসতভিটা দখলে নিতে যান।

নিহত খোকন গাজীর ছেলে সাইফুল গাজী বলেন, রোববার আমি, আমার বাবা, ভাই-বোন খালি হাতে আমাদের বাড়িতে যাই। এ সময় মানিক গাজী তার ছেলে সাদ্দাম গাজী ও তার মেয়ে পুলিশের এসআই রিমা আক্তার আমাদের ওপর হামলা করে। আমার বাবাকে মানিক গাজী ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। তিনি মাটিতে পড়ে গেলে আমরা বাবাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে যাই। কিন্তু তারা ৭-৮ জন ওই অবস্থায় আমাদের সবাইকে ইট ও লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারধর করে। ইটের আঘাতে আমার বাবার মাথা ফেটে যায় এবং তিনি বমি করতে থাকেন। প্রথমে তাকে শ্রীবরদী ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি মারা যান। এ হামলায় গুরুতর আহত আমার বোন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

শ্রীবরদী থানার ওসি মো. রহুল আমিন বলেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে দফায় দফায় বসে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মানিক গাজীর সাব-ইন্সপেক্টর মেয়ে ঘটনাটাকে বড় করেছে। তিনি বলেন, খোকন গাজীকে হত্যার ঘটনায় তার ছেলে বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় পুলিশ মানিক গাজীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে সোমবার আদালতে সোপর্দ করেছে। বিচারক মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।