বগুড়ার শিবগঞ্জে সেতু নির্মাণের আনন্দে আগের দিনেই দেড়টন মিষ্টি বিতরণ!

শিবগঞ্জ(বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারী ২০২০ ১১:৫৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৯০ বার।


বগুড়ার শিবগঞ্জ পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার অর্জুনপুর সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২জানুয়ারী)। আশপাশের ২০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের সেই স্বপ্নপূরণে তাই উৎসব শুরু হয়েছে পুরো পৌর এলাকায়। পাড়া-মহল্লায় আগের দিনই শুরু হয়েছে মিষ্টি বিতরণ। তা-ও আবার স্থানীয় দোকানের মিষ্টি নয়, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির বিখ্যাত ‘চমচম’ এনে বিতরণ করা হলো ভিত্তি স্থাপনের আগের দিনই। বুধবার সকাল ১০টা থেকে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি মিষ্টি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে।
জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে পৌর এলাকার অজুর্নপুর মহল্লা। সেই মহল্লার প্রায় চার সহস্রাধিক মানুষকে বিভিন্নকাজে উপজেলা সদরে আসতে ঘুরতে হয় চার কিলোমিটার সড়ক। এজন্য তারা স্বাধীনতার পর থেকেই রাঙামাটিয়া ও অজুর্নপুরকে বিভক্ত করা করতোয়া নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই সময় থেকে অনেক জনপ্রতিনিধিরাই সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কেউ সে প্রতিশ্রুতি পুরণ করেননি। তখন তারা নৌকায় করে পারাপার হতেন। কিন্তু এরই মধ্যে করতোয়া নৌকাডুবিতে এক শিশুর মৃত্যু হয়।  
সেতুটি নির্মাণ হলে অর্জুনপুর, ছয়ঘড়িয়া পাড়া, গরীবপুর, আকন্দপাড়া, ধোন্দাকোলা, সন্ন্যাসী ধোন্দাকোলা, দেবীপুর, খালিসপুর, অনন্তপুর, উথলী, রথবাড়ি, নারায়ণপুর, ছোট নারায়ণপুর, বাগমারাসহ ২০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ স্বল্প সময়ে উপজেলা সদরে আসতে পারবেন। সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই বর্তমান পৌর মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক সেখানে একটি সেতু নির্মাণে উদ্যোগী হন। পৌরসভা ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৭২টি মিটার দৈর্ঘ্য ও ৪মিটার প্রস্থের আরসিসির গার্ডার এ সেতুটি হবে অত্যাধুনিক নকশায়। সেতু নির্মাণ স্থানের মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা কাজ সম্পন্ন করেছে বিশেষজ্ঞদল। আজ সেখানেই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। আর সে লক্ষেই পৌর এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে আনন্দ-উৎসব।
একে তো সেতুর ভিত্তি স্থাপন, তার ওপরে মিষ্টিমুখ এতে ব্যপক খুশি পৌর এলাকার বাসিন্দারা। আকন্দপাড়া মহল্লার বৃষক আজিজুল ইসলাম, রথবাড়ির গৃহবধূ নূর জাহান বেগম, চুনিপাড়ার ভ্যানচালক মাফেজ উদ্দিন, গরীবপুরের স্কুল শিক্ষক শাহাদত হোসেন জানান, এমন উসবে অংশ নিতে পেরে তারা খুবই আনন্দিত। 
শিবগঞ্জ পৌরসভা মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক বলেন,  সেতুটি নির্মাণ করার ছিল আমার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি। তিনি বলেন, এই সেতু নির্মাণের জন্য গত চার বছরে ৪৬ বার ঢাকায় গিয়েছি। নানা পর্যায়ে দেন-দরবার করেছি। আমার প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। আজ পরিকল্পনা মন্ত্রী সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। আগামী অক্টোবর মাসে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবার কথা। মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরে যে আনন্দ তা থেকেই পোড়াবাড়ির হতে দেড়টন চমচম এনে পৌরবাসীকে মিষ্টিমুখ করানো হয়েছে বলে জানান তিনি।