খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ‘ভয়ানক’ রেকর্ডিং শুনতে চান না ট্রাম্প

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ১৩:৪১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৮৩ বার।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রকে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের অডিও রেকর্ডিং সরবরাহ করেছে। তবে এই ‘ভয়ানক’ রেকর্ডিং তিনি শুনতে চান না। ফক্স নিউজ সানডে অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এই টেপ শুনতে চাই না। আমার জন্য এটা শোনার কোনও কারণ নেই।’

শুক্রবার রেকর্ড করা ওই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, এ বিষয়ে ব্রিফিং নেওয়াটাই যথেষ্ট। এই অডিও শোনার কোনও ইচ্ছে নেই, কেননা এটি একটি যন্ত্রণাদায়ক, ভয়ানক রেকর্ডিং।

এই সাক্ষাৎকারের দুই দিনের মাথায় রবিবার ট্রাম্প জানান, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তাকে বলেছেন, সরাসরি খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার কোনও করণীয় ছিল না।

এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের নির্দেশেই সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ।

ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার আগে আমেরিকায় বসবাসরত খাশোগি ওয়াশিংটন পোস্টে নিয়মিত কলাম লিখতেন। পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সিআইএ নানা তথ্য-উপাত্ত পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের নির্দেশেই খাশোগিকে খুন করা হয়েছে। এর অন্যতম আলামত হচ্ছে যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের ছোট ভাই এবং আমেরিকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালিদ বিন সালমানের সঙ্গে খাশোগির টেলিফোন আলাপ। ওই ফোনালাপে খালিদ খাশোগিকে তুরস্কের ইস্তানবুলে গিয়ে সৌদি কনস্যুলেট থেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করতে বলেন। একইসঙ্গে নিশ্চয়তা দেন যে, তার কোনও ক্ষতি হবে না। কিন্তু খাশোগি সেখানে গিয়ে নিহত হন। এর দুইদিন পরই খালিদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্র থেকে তড়িঘড়ি করে সৌদি আরব ফিরে যান। তাকে আর ওয়াশিংটনে ফেরত পাঠানো হয়নি। অন্য একজনকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পরপরই ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেট থেকে করা একটি ফোনকল আমলে নিয়েছে সিআইএ। ওই ফোনকলে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘাতক দলের সদস্য মাহের মুতরেব জানান, অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের কাছে ১১ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির স্বার্থে খাশোগি হত্যায় সৌদি যুবরাজের হাত থাকার বিষয়টি চেপে যেতে চাইছেন। তবে সিআইএ’র অনুসন্ধানে এ সংক্রান্ত যেসব প্রামাণ্য দলিল উঠে এসেছে তাতে এ হত্যাকাণ্ডে সৌদি যুবরাজকে আর নির্দোষ বলা কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার জেরে সৌদি আরবের কাছে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি বন্ধের দাবি জোরালো হয়ে উঠলেও তাতে সায় দেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দাবি করে আসছেন, দেশটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আরও অনেক উপায় রয়েছে। সৌদিতে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আত্মঘাতী হবে বলেও মনে করেন ট্রাম্প। সূত্র: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, আল জাজিরা।