কবর থেকে তুলে রাস্তায় ফেলা হল শিশুর লাশ

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২০ ১৪:৪৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯২ বার।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলায় মাইকিং করে আহমদীয়া সম্প্রদায়ের এক শিশুর লাশ কবর থেকে তুলে সড়কে ফেলে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হয়।

জানা গেছে, ফেনী সদর উপজেলার বাসিন্দা সাইফুল ইসলামের স্ত্রী স্বপ্না বেগম মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের খ্রীস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। স্বপ্নার বাবার বাড়ি ঘাটুরা গ্রামে। কয়েক মাস ধরে তিনি বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।

নির্ধারিত সময়ের আগে শিশুটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ায় শিশুটিকে হাসপাতালে ইনকিউবেটরে রাখা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে শিশুটি মারা যায়। ধর্মীয় রীতি মেনে সকাল ৭টার দিকে শিশুটির লাশ ঘাটুরা এলাকার একটি সরকারি কবরস্থানে দাফন করা হয়।

কিন্তু আহমদীয়া সম্প্রদায়ের হওয়ায় দাফনের ঘণ্টা দেড়েক পর মাইকিং করে লাশ কবর থেকে তোলার জন্য লোকজন জড়ো করে আহমদীয়া বিদ্বেষীরা। এরপর লাশ কবর থেকে তুলে কবরস্থানের বাইরের সড়কে ফেলে রেখে যায় আহমদীয়া বিদ্বেষীরা। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সেটি জানা যায়নি।

শিশুটির বাবা সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, মাইকিং করে আহমদীয়া সম্প্রদায় বিদ্বেষীদের জড়ো করা হয়। এরপর লাশ কবর থেকে তুলে কবরস্থানের সীমানা প্রাচীরের বাইরে সড়কে ফেলে রাখা হয়। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সেটি আমরাও জানি না। পরবর্তীকালে পুলিশি পাহারায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়া এলাকায় আমাদের সম্প্রদায়ের নিজস্ব কবরস্থানে নিয়ে লাশ দাফন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ঘাটুরার কবরস্থানটিতে আমাদের সম্প্রদায়ের লোকজনের লাশ দাফন নতুন নয়। অনেক আগে থেকেই এখানে দাফন হয়ে আসছে। যদি তাদের কোনো আপত্তি থাকত- তাহলে আমাদের বলতে পারত পরবর্তীকালে আর যেন কাউকে এই কবরস্থানে দাফন করা না হয়। কিন্তু দুইদিনের একটা শিশুর লাশ কবর থেকে তুলে ফেলে দিবে এটা কল্পনাও করা যায় না।

সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হাজারী আঙ্গুর বলেন, গ্রামের বাসিন্দা এবং হুজুররা বাধা দিয়েছেন- আহমদীয়া সম্প্রদায়ের কাউকে কবর দেয়া যাবে না। আমরা গিয়ে দেখি লাশ কবরস্থানের বাইরে। পরে কান্দিপাড়া এলাকায় তাদের সম্প্রদায়ের কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। দুই পক্ষ বিষয়টি সমাধান করে ফেলে।