জায়েদের জন্য চিকিৎসা করাতে পারছেন না গায়ক আকবর

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১২:০৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৮৯ বার।

ডায়াবেটিস, কিডনিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত গায়ক আকবরকে দেয়া কথা রাখেননি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। এতে করে চিকিৎসা থেমে আছে আকবরের। দ্বিতীয় দফায় ভারতে গিয়ে চিকিৎসার অর্থ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে তার পরিবার। 

চলতি বছর গণমাধ্যমে আকবরের অসুস্থতা ও তার করুণ অবস্থার খবর জেনে জায়েদ খান তার পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। তার চিকিৎসার যাবতীয় খরচ দেবেন বলেও গণমাধ্যমকে জানান। সেটা ফলাও করে প্রচারও হয় অনলাইন গণমাধ্যমে। 

সে সময় জায়েদ খান বলেন, আকবর শিল্পী সমিতির ভোটার নয়। তাই ভোটের কথা চিন্তা না করে শিল্পী হিসেবে আরেকজন শিল্পীর পাশে থাকার চেষ্টা করছি আমি। আগামীতে তার যা যা প্রয়োজন সবকিছুই আমি করবো। পাশাপাশি শরীরের কিছু অংশের ছবি তুলেছি। ডাক্তারের সাথে আলাপ করে চিকিৎসায় জন্য সব ব্যবস্থা করবো।

কিন্তু দুই দফায় দশ হাজার করে মোট বিশ হাজার টাকা দিয়েই নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে জায়েদ খান। অথচ আকবরের চিকিৎসার জন্য আর বাকি লাখ খানেকের মতো টাকার। বিষয়টি জায়েদ খানের সঙ্গে আলাপ করতে বারবার ফোন দিলেও ফোন ধরেননা তিনি। আকবর মেসেজ করলেও তার কোন উত্তর দেননা জায়েদ। অথচ আকবরের চিকিৎসার দায়িত্ব তিনি নিয়েছেন  এমন শিরোনামে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হওয়ায় অন্য কেউ আকবরকে সাহায্যও করছেনা। সম্প্রতি সমকালের সঙ্গে আলাপে আক্ষেপ নিয়ে কান্না জড়িত কণ্ঠে কথাগুলো জানান আকবর।

আকবর বলেন,  খুবই অসুস্থ আমি। গত অক্টোবর উন্নত চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়া  গিয়েছিলাম।চিকিৎসা কিছুটা অসম্পূর্ণ রেখেই চলে আসতে হয় আমাকে। কারণ সকল পরীক্ষা নীরিক্ষা শেষে চিকিৎসকরা জানান, সেখানে আরও কিছুদিন ভর্তি থাকতে হবে। তারা ফলোআপে রাখলে  আমার সকল সমস্যা বুঝতে পারবেন। তারপর সে অনুসারে ঔষধ দেবেন। এতে করে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবো। কিডনি যতটুকু নষ্ট হয়েছে তার বেশি আর নষ্ট হবে না। এতে করে যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন তার আমার কাছে ছিলো না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে দুই লক্ষ টাকা চিকিৎসার জন‍্য দিয়েছিলেন সেটা শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া শ্রদ্বেয় হানিফ সংকেত স‍্যার পিজি হসপিটাল থেকে আসার পর ইন্ডিয়া যাওয়ার জন‍্য বড় একটা আর্থিক সাহায্য করেছিলেন। মূলত তার অকৃ্ত্রিম সহায়তার জন্যই এখনও বেঁচে আছি। ঢাকায় ফিরে জায়েদ খানের সঙ্গে যোগাযেগের চেষ্টা করি। মাত্র কিছু টাকা হলেই চিকিৎসা শেষ হবে আমার। এটা জানাই। এরপর থেকেই তিনি আর আমার ফোন ধরছে না।'

জায়েদ খানের কাছে ভিক্ষা চান না আকবর। কোন সহায়তাও এখন আর চাননা। । তিনি চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে এখন কোন খোঁজ কেনো নিচ্ছে না এটা জানার জন্যই এখন ফোন দিচ্ছেন বলে জানান। অথচ তিনি গণমাধ্যমে সহায়তার খবর ফলাও করে প্রচার না করলে অনেকে এই অল্প পরিমাণ টাকা সহায়তা করতেন বলে বিশ্বাস আকবরের। 

আকবর বলেন, 'আমি জায়েদ খানের কাছে ভিক্ষা চাইনা। সে তো সবার কাছে বলেছে আমার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি তো সরকার ও পুলিশদের অনেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেখানে আমার গান গাওয়ার ব্যবস্থা করে দেক। আমি তাদের কাছ থেকে গান শুনিয়ে চিকিৎসার টাকা নেবো।' 

আকবর আরও বলেন, 'এখন কারও কাছে সহায়তা চাইলে অনেকে ধারণা করছেন আমি মিথ্যে বলে সবার কাছ থেকে টাকা নিচ্ছি। কারণ জায়েদ খান আমার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন।' 

জায়েদ খানের বিষয়ে আকবরের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘জায়েদ ভাইকে প্রায় এক মাস ধরে নিয়মিত ফোন দিচ্ছি। তিনি আমাদের ফোন ধরেনা। অথচ তাকে ইন্ডিয়ায় দ্রুত চিকিৎসা শেষ করাতে না পারলে আগের ট্রিটমেন্ট নেয়াটা পুরাই বিফলে যাবে। বড় ক্ষতি হয়ে যাবে আকবরের।'

কিশোর কুমারের ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে’ নতুন করে গেয়েছিলেন আকবর। ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে প্রচারিত এই গান তাকে আলোচনায় নিয়ে আসে। এরপর ‘তোমার হাত পাখার বাতাসে’ গানটি দেশে ও দেশের বাইরের দর্শক-শ্রোতাদের কাছে তাকে পরিচিত করে তোলে।

সাত বছর ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছেন আকবর। দুই বছর ধরে শরীরে বাসা বেঁধেছে জন্ডিস, রক্তের প্রদাহসহ নানা রোগ।