রফতানি আদেশ ও বিক্রি বেড়েছে বাণিজ্যমেলায়: বাণিজ্যমন্ত্রী

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:১১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২১২ বার।

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আসর শনিবার শেষ হয়েছে। এবারের মেলার রফতানি আদেশ ও বিক্রি দুটোই বেড়েছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

তিনি বলেন, এবার সফলভাবে মেলা শেষ হয়েছে। মাসব্যাপী এ মেলায় অর্ধকোটি ক্রেতা ও দর্শনার্থী এসেছেন। মেলায় অন্যান্য বারের চেয়ে এবার বিক্রি বেশি হয়েছে এবং রফতানি আদেশ প্রায় ২০০ কোটি টাকা এসেছে। নতুন নতুন পণ্যে পণ্য কেনায় উৎসাহিত হয়ে পণ্য কেনার আদেশ বাড়িয়েছেন বিদেশি ক্রেতারা।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য্যের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব এস.এম রেজওয়ান হোসেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এবার বাণিজ্য মেলায় ২০০ কোটি টাকার কাছাকাছি রফতানি আদেশ এসেছে। যা গত বছরের চেয়ে ৪০ কোটি টাকা বেশি। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর মেলায় ১৬০ কোটি টাকার রফতানি আদেশ এসেছিল। ২০১৭ সালে মেলার সমাপনীতে ইপিবি ঘোষণা দিয়েছিল, রফতানি আদেশ এসেছে ২৪৩ কোটি টাকা।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে রফতানি বাড়াতে হবে। বর্তমান রফতানি বাণিজ্য তৈরী পোশাক শিল্পের উপর নির্ভরশীল। দেশে আরো অনেক সম্ভাবনাময় রফতানি খাত রয়েছে। সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। চামড়া জাত পণ্য রফতানিতে ভাল করলেও চামড়া রফতানি কমেছে। এর বড় কারণ বিতর্কিত কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি)। দেশে এখন মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে নানা খাতের শিল্পগুলো ভাল করছে। এগুলো কাজে লাগাতে হবে, রফতানি আরও গতিশীল করতে হবে। দেশে এখন বিশ্বমানের পণ্য তৈরি হচ্ছে। এতে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। ফলে এ পণ্য আমদানির বিকল্প স্থানীয় শিল্পের প্রসার হচ্ছে।

টিপু মুনশি বলেন, ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে একটি স্থায়ী এপিবিশন সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা পূর্বাচলে আয়োজন করা সম্ভব নয়। সেখানে সারা বছর জুরে বিভিন্ন মেলা ও প্রদর্শনী আয়োজন করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, এই জায়গা (রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের মেলা মাঠ) মেলার জন্য অপ্রতুল। অনেকের ধারণা, পূর্বাচলের দিকে যেটা হচ্ছে, সেটা এ রকম বাণিজ্য মেলা হবে কি-না। সেটা সম্ভবত হবে না। এখানে ৩৬ একরের ওপরে জায়গা, তারপরও সংকুলান হয় না। পূর্বাচলে জায়গা আরও কম। রফতানি পণ্যের বিভিন্ন প্রদর্শনী সারাবছর জুরে হবে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানও অংশ নেবে। এই ধরনের বাণিজ্য মেলা ওখানে করা যাবে না।

তিনি বলেন, এখানে জায়গা অপ্রতুল। আগামী ৫ থেকে ১০ বছর পরে এই মেলা কোথায় হবে সেটাও কিন্তু এখনই চিন্তা করার সময় এসেছে। সরকারি কর্মকর্তারা রয়েছেন, তারা এই ব্যাপারটা তারা দেখবেন। মন্ত্রী হিসেবে তিনি জানতে চেষ্টা করবেন, কী করা যায় সামনের দিনগুলোতে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, এ পর্যন্ত ২৪টি মেলার মধ্যে ৯টি মেলা তিনি করেছেন। এবারও মেলা বেশ ভাল জমে উঠেছে। বিক্রিও বেশ ভাল হয়েছে। এই মেলা থেকে ইপিবি ভাল লাভবান হয়। এতে ইপিবির বড় একটি তহবিল তৈরি হয়। তিনি মন্ত্রী থাকাকালীন ইপিবির কর্মকর্তাদের পরিশ্রমের জন্য সুযোগ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

তিনি বলেন, মেলার মাধ্যমে প্রচার বাড়ায় এবারও সেবাসহ ৪৫ বিলিয়ন ডলারের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।

বিজয় ভট্টাচার্য বলেন, এবার মেলায় ব্র্যান্ডিংকে বেশি গুরূত্ব দেওয়া হয়েছে। মেলায় পণ্য বিক্রি মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল না। এতে এবার বেশ সারা মিলেছে। 

প্রসঙ্গত, ইপিবি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে আসছে। ২৪তম বাণিজ্য মেলা ৯ জানুয়ারি শুরুহয়ে গতকাল ৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে। মেলায় দেশী-বিদেশী ৬০৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।

মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৩টি ক্যাটাগরিতে ৪২টি সেরা প্রতিষ্ঠানকে ট্রফি দেওয়া হয়েছে। ৩৩টি সহযোগি প্রতিষ্ঠানকে ক্রেস্ট এবং সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানের জন্য ৩টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। খবর সমকাল অনলাইন